কলকাতার অভিজাত এলাকা এ.জে.সি বসু রোডে সেনকো গোল্ডের অফিস থেকে গ্রেফতার হল তিনজন ভুয়া বন্দুক লাইসেন্সধারী ব্যক্তি। রাজ্যের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF) ১২ জুলাই ২০২৫ তারিখে STF PS Case No-13 অনুযায়ী এক গুরুতর মামলা রেকর্ড করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির BNS এর 61(2), 318, 336, 338, 340 ধারার পাশাপাশি Arms Act এর 25(1B)(a) ধারায় মামলা দায়ের হয়।
ধৃত ব্যক্তিরা কারা?
এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া তিনজন অভিযুক্ত হলেন—
1️⃣ দিনেশ মাহালি (৪৫) – বরল সরদার পাড়া, নরেন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত
2️⃣ রাজু সরদার (৩৭) – দক্ষিণ খারাবেরিয়া, চণ্ডীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা
3️⃣ বিশ্বজিৎ সরকার (৪০) – সান্যাল চর, চাকদহ, নদিয়া
উদ্ধার অস্ত্র ও কার্তুজ
এই তিনজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে:
-
৩টি SBBL (Single Barrel Bridge Loading) ১২ বোরের বন্দুক
-
১৭টি ১২ বোরের কার্তুজ
-
একাধিক ভুয়া বন্দুকের লাইসেন্স
তাঁরা সকলেই সেনকো গোল্ডের বিভিন্ন শাখায় নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করছিলেন। অথচ তাদের লাইসেন্স ছিল সম্পূর্ণ ভুয়া। এতদিন ধরে তারা কোম্পানিকে এবং লাইসেন্সিং অথরিটিকেও প্রতারিত করছিলেন।
অভিযানের বিস্তারিত
STF-এর একটি বিশেষ দল ১২ জুলাই, শুক্রবার কলকাতার ৪১এ, এ.জে.সি বসু রোডের ১০ তলার ইউনিট নম্বর ১০০১-এ হানা দেয়। সেখান থেকেই ধৃতদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় আরও ১৩টি ভুয়া লাইসেন্স, ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৪৯টি কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করা হয়, যেগুলি সেনকো গোল্ডের বিভিন্ন দোকানে নিযুক্ত আরও ১৩ জন নিরাপত্তারক্ষীর নামে রেজিস্টার্ড ছিল। তদন্ত চলছে।
আদালতের রায়
ধৃত তিন অভিযুক্তকে ১৩ জুলাই আদালতে পেশ করা হয়। লার্নেড চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (CJM), কলকাতা তাদের ২২ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ এখন বাকিদের নাম ও সংশ্লিষ্ট লাইসেন্স জালিয়াতির উৎস খতিয়ে দেখছে।
নিরাপত্তা নিয়ে খোঁচা খেলো প্রতিষ্ঠান?
সেনকো গোল্ডের মতো একটি জনপ্রিয় স্বর্ণালঙ্কার প্রতিষ্ঠান কীভাবে এই ধরনের ভুয়া বন্দুকধারীদের নিয়োগ করল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু প্রাইভেট এজেন্সির মাধ্যমেই এই লোকজন নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিল। তদন্ত চলছে এই ভুয়া অস্ত্র লাইসেন্স তৈরির পেছনে বড় কোনও চক্র আছে কিনা।
কলকাতায় ভুয়া বন্দুক লাইসেন্স কেলেঙ্কারি ২০২৫ সালে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার উপর বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। STF-এর তৎপরতায় এক বিপজ্জনক চক্রের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। এ নিয়ে রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাও তদন্তে নামতে পারে বলে জানা গেছে।