রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
(সোনারপুর চাইল্ড মার্ডার কেস) — দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের কোদালিয়া কদমতলা এলাকা সোমবার সকাল থেকেই স্তব্ধ। রক্তে ভেজা মেঝেতে পড়ে ছিল চার বছরের ছোট্ট প্রত্যুষা কর্মকার-এর নিথর দেহ। রবিবার সন্ধ্যায় আচমকা বাড়ির ভিতর থেকে এক হৃৎবিদারক চিৎকার শুনে ছুটে আসে প্রতিবেশীরা। দরজা খুলতেই চোখে পড়ে বিভীষিকার দৃশ্য — রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছে শিশুটি!
দ্রুত (Sonarpur Rural Hospital)-এ নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, শিশুটি আর বেঁচে নেই। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে শোক ও আতঙ্কের স্রোত। কে এমন নৃশংসতা ঘটাল, প্রশ্নে গমগম করছে গোটা এলাকা।
—
🩸 ঘরে ছিলেন দাদু-দিদা, পরিচারিকা — কিন্তু কীভাবে ঘটল এই হত্যাকাণ্ড?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির মা কলকাতার এক নামী বৈদ্যুতিক সংস্থায় কর্মরত এবং বাবা একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন। প্রতিদিনের মতোই রবিবার সকালে তাঁরা কাজে বেরিয়ে যান। তখন ঘরে ছিলেন প্রত্যুষার দাদু-দিদা এবং এক গৃহপরিচারিকা।
কিন্তু তাঁদের উপস্থিতিতেই এমন দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত। প্রাথমিক তদন্তে (Sonarpur Police) জানিয়েছে, শিশুর শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এতে স্পষ্ট, মৃত্যুটি স্বাভাবিক নয়, বরং এটি (murder of child) হতে পারে।
পুলিশের তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড় — গ্রেফতার দাদু প্রণব ভট্টাচার্য
রবিবার রাতেই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর দাদু, দিদা এবং পরিচারিকাকে আটক করে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর দাদু প্রণব ভট্টাচার্য-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাঁকে (Baruipur Sub-Divisional Court)-এ পেশ করা হবে।
(Police investigation) সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে দাদুর বয়ানে অসংগতির প্রমাণ পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশুটির ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই স্পষ্ট হবে মৃত্যুর আসল কারণ।

প্রতিবেশীদের চোখে জল, “মেয়ে বলেই কি এমন পরিণতি?”
কোদালিয়া কদমতলা আজ শোকস্তব্ধ। চার বছরের হাসিখুশি প্রত্যুষার মৃত্যুতে এলাকা জুড়ে কান্নার রোল। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, “মেয়ে বলেই কি খুন প্রত্যুষা?”— এমন নিষ্ঠুরতার পেছনে কী মানসিকতা কাজ করল, তা বুঝে উঠতে পারছে না কেউ।
পুলিশের বক্তব্য
বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালী জানিয়েছেন — “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।”
সোনারপুরের এই রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি গোটা রাজ্যকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এক শিশুর এমন করুণ মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র ক্ষোভ, প্রশ্ন — ঘরের ভিতরেই যদি নিরাপত্তা না থাকে, তবে শিশুরা কোথায় নিরাপদ?