শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
মানুষের পথ-নিরাপত্তা সবার আগে। তাই রাস্তা, জলাশয়, রেললাইনের ওপর মন্দির-মসজিদ-গির্জার মতো যে কোনও ধর্মীয় নির্মাণ থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
পাশাপাশি, দেশের শীর্ষ আদালত বলেছে, ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ।
তাই দেশের মানুষের স্বার্থে সব ধর্ম নির্বিশেষে বুলডোজার দিয়ে দখল বিরোধী অভিযান চলবে।
আজ, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে যোগী সরকারের বুলডোজার অ্যাকশনের বিরোধিতায় দায়ের হওয়া মামলার শুনানি ছিল। বিরোধীরা বারবার অভিযোগ করেছে, বুলডোজার দাওয়াইয়ের নামে সংখ্যালঘুদের উপর লাগাতার আক্রমণ চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চে চলছিল সেই মামলা।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট এবং মধ্যপ্রদেশের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে এদিন আদালতে বলেন, কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ থাকলে কি তাঁর বাড়ি বা জমিতে বুলডোজার অ্যাকশন নেওয়া যায়?
জবাবে বিচারপতি বলেন, ‘না তা কখনওই নয়। ধর্ষণ কিংবা সন্ত্রাসবাদের মতো অপরাধের ক্ষেত্রেও তা করা যায় না। এ ক্ষেত্রে রাতারাতি নোটিস টাঙিয়ে দেওয়াও অনুচিত। পুরসভার কাছে পর্যাপ্ত আইনি অধিকার রয়েছে। ফলে এই তিন রাজ্যে কোন কোন ক্ষেত্রে বুলডোজার অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে এবং কী কারণে নেওয়া হয়েছে সেই যুক্তিগুলি আদালতের পর্যালোচনা করে দেখা উচিত। সেই সঙ্গে, মানুষকে এই বিষয়ে সচেতন করতে প্রশাসনের একটি অনলাইন পোর্টাল থাকা উচিত। এর ফলে একটি রেকর্ডও থেকে যাবে।’
তবে এর পাশাপাশিই এদিন আদালত বলে, ‘আমাদের দেশ ধর্মনিরপেক্ষ। তাই আমাদের আইনি নির্দেশও হবে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষেই। তাই, যদি রাস্তা, ফুটপাথ, জলাশয় বা রেললাইনের ওপর কোনও বেআইনি নির্মাণ থাকে তাহলে তা অবশ্যই ভেঙে দিতে হবে। মানুষের নিরাপত্তা সবার আগে।’
আদালতের পর্যবেক্ষণ, যদি রাস্তার মধ্যিখানে যদি মন্দির, মাজার, গুরুদ্বার বা যে কোনও ধর্মীয় ইমারত থাকে তাহলে তাতে মানুষেরই সমস্যা। ফলে দখলমুক্ত করার অভিযান জরুরি। কারণ গণনিরাপত্তা সবার ওপরে।
বিচারপতি গাভাইয়ের কথায়, ‘বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে আইন কথা বলবেই। কোনও ধর্ম বা অন্ধ বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না সংবিধান। ধর্মীয় নির্মাণও জনজীবনের বাধা হতে পারে না।’