সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিক স্কুলগুলির অন্তর্ভূক্ত করার কথা আগেই ভাবা হয়েছিল। তবে সেই সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করা হচ্ছিল না। নানা কারণে তা কার্যকর করা যাচ্ছিল না। এবার সেটা করা গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে দু’হাজারের বেশি প্রাথমিক স্কুল আছে। আগামী ২০২৫ সাল থেকেই পঞ্চম শ্রেণিকে সেই সব প্রাথমিক স্কুলগুলির শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তিও।
আগে এই পঞ্চম শ্রেণি হাইস্কুলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাতে নানা অসুবিধা হতো বলে স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর। এবার শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিক শিক্ষার অধীনে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আগামী শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০২৫ সাল থেকে রাজ্যের অন্তত ২ হাজার ৩৩৫টি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে বলে স্কুল শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গিয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে। এই পঞ্চম শ্রেণিকে যুক্ত করার তালিকায় আছে কলকাতার ৫২টি স্কুল। আর হাওড়া ১৪৫টি, হুগলি ২০৮টি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার যথাক্রমে ১৯৮টি ও ৩২৭টি, পূর্ব মেদিনীপুর ৬১টি, পশ্চিম মেদিনীপুর ৬৫টি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের যথাক্রমে ৮৩টি ও ৮৭টি, বীরভূমের ১১৯টি, বাঁকুড়ার ৪৫টি, পুরুলিয়ার ২৪টি, জলপাইগুড়ির ২৭টি, মালদার ২২৯টি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ৭৯টি এবং ১৭টি, কোচবিহারের ২৫টি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
অন্যদিকে স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে সবরকম ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। দেশের অন্যান্য রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ দেওয়া হয়। একমাত্র বাংলাতেই এই নিয়ম চালু ছিল না। তবে ২০২৫ সাল থেকে সেটা কার্যকর হতে চলেছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে তাতে উল্লেখ রয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ২ হাজার ৩৩৫টি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি যোগ করা হবে। স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে জেলা এবং কলকাতার সমস্ত প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
এছাড়া বাংলায় সরকারি স্কুলের সংখ্যা এখন প্রায় ৫০ হাজার। সেখানে প্রাথমিকভাবে দু’হাজারের বেশি প্রাথমিক স্কুলে এই নিয়ম চালু হচ্ছে আগামী জানুয়ারি মাস থেকেই। কেন্দ্রীয় সরকারের আইন অনুযায়ী প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা প্রাথমিক স্তরের অন্তর্ভুক্ত। তবে পঞ্চম শ্রেণির স্থান বাংলায় উচ্চ প্রাথমিকেই ছিল। সেটাই এবার প্রাথমিক শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত হতে চলেছে। তাহলে কি কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি মেনে নিচ্ছে রাজ্য সরকার?
উঠছে প্রশ্ন। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, কেন্দ্র এবং অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সক্রিয় রাজ্য। তাই এমন সিদ্ধান্ত। পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিক স্কুলগুলির অন্তর্ভুক্ত করতে হলে এখনই ৫০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।