সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
“ভারত সরকার রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বাংলাদেশে শান্তিসেনা পাঠানোর আর্জি জানাক। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকার পুরোপুরি নীরব।” বাংলাদেশের সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, “প্রধানমন্ত্রী না পারলে বিদেশমন্ত্রী এ বিষয়ে সংসদকে জানান।” বিধানসভায় প্রস্তাব আনেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এমন ঘটনা ঘটে চললে, আমাদের লোককে ফিরিয়ে আনতে চাই। একবেলা খাব, দরকারে একটা রুটি ভাগ করে খাব। আমাদের লোক অত্যাচারিত হোক চাই না।” সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব লিখিত ভাবে পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারকে।
সোমবার মমতা বিধানসভায় বলেন, “সাম্প্রতিক যে ঘটনাগুলি ঘটছে, আমি এই ব্যাপারে নাক গলাতে চাই না। এটা আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারে পড়ে।” তিনি উল্লেখ করেছন, কয়েকদিন আগে এ রাজ্যের প্রায় ৭৯ জন মৎস্যজীবী ভুল করে ঢুকে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। তাঁদের বাংলাদেশের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, তারপর জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁরা এখনও মুক্তি পাননি। কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি বলে উল্লেখ করেন মমতা।
মমতা বলেন, “গত ১০ দিন ধরে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার একেবারে চুপ করে আছে। আর তাদের দল রোজ মিটিং-মিছিল করছে। বলছে বর্ডার আটকে দেব। কিন্তু এগুলো আমাদের এক্তিয়ারে পড়ে না। সরকার গাইডলাইন দিলে আমরা বন্ধ করতে পারি।” একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি দাবি করেছেন তিনি। মমতার দাবি, প্রধানমন্ত্রীর যদি কূটনৈতিক কারণে কোনও অসুবিধা থাকে, তাহলে অন্তত বিদেশমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে জানাক যে তাঁরা কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
অন্যদিকে, লাগাতার বাংলাদেশে ভারতীয় পতাকাকে লাগাতার অসম্মান করা হচ্ছে। আর তা নিয়ে ক্ষুব্ধ এপার বাংলার মানুষ। আর তা নিয়েও এদিন বিধানসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে জাতীয় পতাকার অমর্যাদা করা ঠিক হচ্ছে না। আমি ইস্কনের সঙ্গেও কথা বলেছি।’ বলা বাহুল্য, ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি সুতোয় বাধা। তাই ওপারে বিদ্বেষ দেখা দিলে তার প্রভাব পড়ছে এপারেও। আর এবার এই পরিস্থিতি নিয়ে বাংলার অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবারও বিধানসভার অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মমতা জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ নিয়ে দেশের সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তিনি তার সঙ্গে আছেন। বুধবার সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রায় একই কথা বলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, বাংলাদেশের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি।