সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
অনুব্রত মণ্ডল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক-সহ পিএমএলএ (PMLA) মামলায় জেলে থাকা নেতাদের জামিন পাওয়ার রাস্তা আরও প্রশস্ত হল। সুপ্রিম কোর্টের এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে স্পষ্ট হচ্ছে সেই ইঙ্গিতই। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ঝাড়খণ্ডের একটি আর্থিক দুর্নীতি মামলায় প্রেম প্রকাশ নামে এক ব্যক্তিকে জামিন দিয়ে বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ।
শীর্ষ সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ ধারা উল্লেখ করে বলেন, জামিনই হল নিয়ম এবং জেল ব্যতিক্রম (Bail is the rule and jail is the exception)।
দুর্নীতি মামলায় জেলে বসে অনুব্রত মণ্ডল থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বেআইনি আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনে মামলা রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা জেলে। তবে বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের আর্থিক তছরুপ মামলায়, তাঁর সহকারী প্রেম প্রকাশের জামিন দেওয়ার পরই পিএমএলএ মামলায় গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন উঠল।
শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, আইনের নীতিতে জামিনই নিয়ম। সেখানে জেল ব্যতিক্রম। আর্থিক তছরুপ মামলাতেও এই নিয়মই কার্যকর হয়। সম্প্রতি দিল্লি আবগারি নীতি দুর্নীতি মামলায় আপ নেতা মণীশ সিসোদিয়ার জামিনের উদাহরণ দিয়েই সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, “মণীশ সিসোদিয়ার মামলায় রায়ের উপরে ভিত্তি করেই বলা যায় জামিন নিয়ম এবং জেল ব্যতিক্রম।”
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে দুই বিচারপতির বেঞ্চের তরফে বলা হয়:
অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যক্তিকে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন শাস্তি দেওয়া যায় না।
ইডি আর্থিক তছরুপ বা অর্থ পাচার মামলায় অভিযুক্ত কোনও ব্যক্তিকে তাঁর নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বাধ্য করতে পারে না। PMLA-এর ধারা ৫০-এর অধীনে ইডিকে দেওয়া ক্ষমতা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০(৩)-এর অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে না।
যদি কোনও অভিযুক্ত ইতিমধ্যে একটি মামলায় অভিযুক্ত থাকে, তাহলে তার হেফাজতে থাকা অবস্থায় অন্য কোনও মামলায় তাকে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বাধ্য করা যাবে না।
যদি কোনও অভিযুক্ত PMLA-এর একটি মামলায় হেফাজতে থাকে, এবং ইডির দ্বারা তদন্ত করা অন্য মামলায় সে নিজের দোষ স্বীকার করে কোনও বক্তব্য দেয়, তবে সেই বক্তব্য তার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না।
ইডিকে যদি অন্য কোনও মামলায় সাক্ষ্য নিতে হয়, তাহলে তাকে সেই আদালতের অনুমতি নিতে হবে, যে আদালত অভিযুক্তকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে।