আর জি কর কান্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ১ অক্টোবর, মঙ্গলবার কলেজ স্কোয়ার থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ওইদিন বিকেল ৫ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মিছিলে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ, মিছিলে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়েছে, মিছিলে কতজন অংশ নিচ্ছেন, সেই সংখ্যা স্পষ্ট করতে হবে। এ কথা শুনেই চিকিৎসকদের পক্ষের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা আমাদের সদস্যদের সংখ্যা বলতে পারি, কিন্তু সাধারণ মানুষ যদি মিছিলে যোগ দেন, সেই সংখ্যা আমরা কী করে বলব?”
এরপরই রাজ্যকে সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকারের কথা মনে করালেন বিচারপতি ভরদ্বাজ। বিচারপতি রাজ্যের উদ্দেশে বলেন, “মনে করুন এই মিছিলে যদি ১০ লক্ষ সাধারণ নাগরিক শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেন, তাহলে কি তারা প্রতিবাদ জানাতে পারবেন না? এটা তো তাদের সাংবিধানিক অধিকার।”
পাশাপাশি রাজ্যকে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ প্রশ্ন করেন, “যে এলাকায় ১৪৪ ধারা নেই, সেখানে যদি সাধারণ মানুষ বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন, তাহলে রাজ্য কি ট্রাফিকের কারণ দেখিয়ে প্রতিবাদে বাধা দিতে পারে?” উত্তরে রাজ্য জানায়, ‘নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাজ্যের হাতে আছে।’
দুর্গাপূজার সময় যে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়, সেটা পুলিশ যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, প্রতিবাদের মিছিলও সেভাবেই নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলেছেন বিচারপতি ভরদ্বাজ। পুজোর সময় শহরে যে মানুষের ঢল নামে, সে কথা উল্লেখ করে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেলের উদ্দেশে এদিন বিচারপতি বলেন, “আমি এবং আপনি দুজনেই এখানে ছোটবেলা থেকে আছি। দুর্গাপূজার সময় লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নামেন। ৪৫-৫০ বছর ধরে পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে সবটা নিয়ন্ত্রণ করছে। মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করুক, পুলিশও নিয়ন্ত্রণ করুক।” পাশাপাশি রাজ্যকে বিচারপতি বলেন, “গোটা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে দিন, তাহলে আর কোথাও মিটিং মিছিল হবে না।”
এই প্রসঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বিচারপতি বলেন, যাঁরা দুর্গাপূজা করেন, তাঁরা কি জানেন যে কত দর্শক আসবেন? যেমন ধরুন, সুরুচি সঙ্ঘ। গত বছর আমি গিয়েছিলাম। হাজার হাজার মানুষ যান। পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক থাকেন। পুলিশ ভালভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন।