সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
আর জি কর মেডিকেল কলেজে ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আগে একাধিকবার প্রতিবাদ করেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ আর জি কর কাণ্ডে নিহত চিকিৎসকের পরিবার। শীর্ষ আদালতে এবার মামলা দায়ের করলেন নির্যাতিতার অভিভাবকরা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-এর তদন্তে অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করেছেন। সিবিআই তদন্তে কোথায় কোথায় অসঙ্গতি, তার উল্লেখ-সহ মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা। চলতি মাসেই ট্রায়াল কোর্টে আর জি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণার সম্ভাবনা। তার আগেই শুনানি চাইছে নির্যাতিতার পরিবার।
সিবিআই তদন্তে অসঙ্গতির উল্লেখ করে এর আগে কলকাতা হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হয় নির্যাতিতার পরিবার। ৪২টি প্রশ্নের একটি তালিকাও জমা করা হয়েছিল আদালতে। কিন্তু শীর্ষ আদালতের নজরদারিতে তদন্ত হচ্ছে বলে হাইকোর্ট আলাদা করে হস্তক্ষেপ করেনি। তদন্ত নিয়ে আলিপুর কোর্টেও ৩৫টি প্রশ্ন তোলা হয়। এবার সর্বোচ্চ আদালতেই গেলেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা। ট্রায়াল কোর্টে চলতি মাসেই সাজা ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে, তার আগেই শুনানি চায় নির্যাতিতার পরিবার।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “আর জি করের ঘটনা ভয়ঙ্কর। মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে আমরা সবাই কড়া নিন্দা করেছি। মুখ্য়মন্ত্রী প্রথম দিন থেকে বলছেন, কলকাতা পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে। মৃতার মা-বাবার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা, সমবেদনা রেখেই বলছি, কিছু লোকের কথায় ধারাবাহিক ভাবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন ওঁরা। কলকাতা পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধরল। ওঁরা বললেন, সিবিআই চাই। সিবিআই চাইতে গেলেন। সিবিআই তদন্ত হয়েছে। সিবিআই যদি তদন্ত করে কলকাতা পুলিশের হাতে ধৃতের গ্রেফতারিকে ন্যায্য বলেন, সেটা আবার ওঁরা মনতে পারছেন না। এটা কী করে হতে পারে? তদন্ত এবং বিচার, গোটাটা সুপ্রিম কোর্ট দেখছিল। শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টে সমস্তটা বলার পূর্ণ সুযোগ ছিল ওঁদের। কিছু রাজনৈতিক অতৃপ্ত আত্মা অন্ধ তৃণমূল বিরোধিতা থেকে অভয়ার মা-বাবার আবেগকে বিপথে চালিত করছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ গিয়েছে, সাজা ঘোষণার মুখে। এখন নতুন করে আবার তদন্তের দাবি। তাহলে কি কেউ বা কারা সঞ্জয় রায়কে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে?”
আর জি করের ঘটনায় ধর্ষণ-খুনের মামলায় জামিন পেয়েছেন আর জি কর হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্য এবং আন্দোলনকারীরা। এর পর শিয়ালদা আদালতে সিবিআই জানায়, চিকিৎসককে ধর্ষণ খুনের ঘটনায় এবার তথ্যপ্রমাণ লোপাট, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করতে চায় তারা। তদন্তের অভিমুখ তথ্যপ্রমাণ লোপাট, বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ও ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আগ্রহী সিবিআই। ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্টের অপেক্ষা করছে তারা। তবে আদালত জানায়, চূড়ান্ত চার্জশিট যখন জমা পড়েনি, এই আবেদনের প্রয়োজন নেই।