সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“বাঘ পালিয়ে আসে কেন রোজ রোজ? তোমার বাঘ তুমি সামলাতে পারছো না কেন!” এভাবেই বুধবার আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক সভা থেকে বড় প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নাম না করে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের সরকারকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “ওরা নিশ্চয়ই বাঘকে খেতে দেয় না! তাই তো বাঘ পালিয়ে আসে। আর আমাদের গ্রামগুলো ভয়ে কাঁপে। আর যেই ধরা হল, ওমনি ওরা ফোন করে- ফেরৎ নেওয়ার জন্য লাফালাফি করতে থাকে! এবার বাঘ এলে ওদের বলবে- তোমাদের লোক পাঠাও!”
এ প্রসঙ্গে আগেই পড়শি রাজ্যকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা এও বলেছিলেন, “না পারলে বলে দিন, বাঘকে আমরা রেখে দেব!”
প্রসঙ্গত, ওড়িশার সিমলিপাল জঙ্গল থেকে বাংলার জঙ্গলে পালিয়ে আসা জিনতকে ধরার পরেই যেভাবে ওড়িশা সরকার বাঘ রাজনীতি শুরু করেছিল, তার প্রেক্ষিতে মমতা কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন, “আবার একটা চলে এসেছে। তোমরা তো তোমাদের জঙ্গলের খেয়াল রাখবে। যাতে তোমাদের বাঘ আমাদের এখানে ঢুকে না পড়ে। এমনিতেই হাতির সংখ্যা আমাদের বেড়ে গিয়েছে। হাতির জন্মের হার অনেক বেশি। খাদ্য দিতেও সমস্যা। ধান খেতে ভালবাসে, চলে যাচ্ছে। রাস্তায় চলে এল। বনকর্মীদের সামলাতে হয়। ওড়িশা সরকারকে বলব, বাঘ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে। এখন আবার যদি সেই আতঙ্ক সহ্য করতে হয়। তাহলে ছেড়ে দিন। আমরা সারাজীবন রেখে দেব। বাঘকে পাঠালে চিরকালের জন্য পাঠান। আমরা রেখে দিচ্ছি। তোমাদের নিজেদের রাখার জায়গা নেই। নিয়ে গিয়ে জলে ছেড়ে দিলে। এটা কী হচ্ছে? আমি ওড়িশা সরকারকে দোষারোপ না করে বিশেষ অনুরোধ করব। দয়া করে বনকর্মী পাঠিয়ে বাঘকে ফেরত নিয়ে যান। শুধু আমাদের দোষারোপ করবেন না। আমাদের বাসিন্দারা আর ভোগান্তি সহ্য করবে না।”
পাশাপাশি আজ আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক সভা থেকে আরো একবার হাতির সংখ্যা বেড়ে যাওয়া নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “হাতির সংখ্যা বেড়ে গেছে। বারে বারে কেন্দ্রকে জানাচ্ছি। কিন্তু ওরা এবিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করছে না।”
উত্তরবঙ্গের জঙ্গল এলাকায় বন দফতরের একাধিক বাড়াবাড়ি পদক্ষেপের জন্য এলাকার মনাুষ ক্ষুব্ধ বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় বন কর্তাদের সতর্ক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কিছুদিন আগে আপনারা একটা বাঘকে ধরলেন, তাদের আমরা ধন্যবাদ জানিয়েছি। ভাল কাজের যেমন প্রশংসা প্রাপ্য তেমনই খারাপ কাজ নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবেই। তাই মানুষের সমস্যা হয় এমন কোনও কাজ করবেন না।”