সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
কসবায় দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালত থেকে জামিন পেলেন কলেজের নিরাপত্তা রক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ হাজার টাকার ব্যাক্তিগত বণ্ডে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছে।মুলত নির্যাতিতার বয়ান ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজের প্রমানের ভিত্তিতে পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দোষ বলে আদালতে সওয়াল করেন তার আইনজীবী। ঘটনার সময় ঐ নিরাপত্তা রক্ষীকে জোর করে ভয় দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান আইনজীবী। উল্লেখ্য গত ২৫ জুন সন্ধ্যার এই ঘটনায় পুলিশ মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছিল।মুল অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র নেতা মনোজিৎ মিশ্র, জাইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও নিরাপত্তা রক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার চার মাসের মধ্যেই জামিন পেলেন নিরাপত্তা রক্ষী।
শর্তসাপেক্ষে কসবা ল’ কলেজের নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করল আলিপুর সেশনস কোর্টের ভ্যাকেশন বেঞ্চ। পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় আদতে খড়দার বাসিন্দা, কিন্তু তিনি কাজের জন্য কসবায় ভাড়া থাকতেন।
কেন তিনি জেনেশুনে মুখ বন্ধ রেখেছিলেন? কেন পরদিন তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে কিছু জানাননি? ভয়ে নাকি অন্য কোনও চাপে? ‘গণধর্ষণের সময়’ কী করছিলেন তিনি? জিজ্ঞাসাবাদের সময় এহেন বিভিন্ন প্রশ্নের সদুত্তর না মেলায় কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছিল নিরাপত্তারক্ষীকে। নির্যাতিতার অভিযোগ ছিল, নিরাপত্তারক্ষীর কাছে সাহায্য চেয়েও পাননি তিনি। আর সেখানেই প্রশ্ন ওঠে, কেন নিরাপত্তারক্ষী সাহায্যে এগিয়ে আসেননি?
অভিযোগকারিণীর বয়ান অনুসারে, তাঁকে সাহায্য করার পরিবর্তে গার্ড রুম থেকে চলে যান নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্যাতিতা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে সাহায্য করার বদলে তিনি উলটে অভিযুক্তদেরই সাহায্য করেছিলেন। অপরাধ ঘটার সময় তিনি কলেজে উপস্থিত ছিলেন। নির্যাতিতার বয়ানেই উঠে আসে সেই তথ্য। তারপরই প্রশ্ন ওঠে, কেন তিনি বাধা দেননি? প্রথম থেকেই সন্দেহের তালিকায় ছিল নিরাপত্তারক্ষীর ভূমিকা। ২৫ জুন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণের শিকার হন প্রথম বর্ষের ছাত্রী। গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে আসে কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র মনোজিৎ মিশ্র (৩১)। সেইসময় কলেজের অস্থায়ী কর্মীও ছিল মনোজিৎ। তাঁকে অপরাধে মদত দিয়েছিল কলেজেরই তৃতীয় সিমেস্টারের ২ পড়ুয়া প্রমিত মুখোপাধ্যায় (২০) এবং জাহিদ আহমেদ (১৯)।

নির্যাতিতা থানায় অভিযোগ জানানোর পর, ২৬ জুন তিন অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা হয়। ধৃত ৩ জনকে জেরা করে নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কথা জানা যায়। এরপর ২৮ জুন গ্রেফতার করা হয় নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সাড়ে ৩ মাসের মাথাতেই মিলল জামিন। প্রশ্ন উঠেছিল, কেন তিনি বাধা দেননি? কেন তিনি কিছু জানাননি? কেন ইউনিয়ন রুমে হকি স্টিক মজুত ছিল? ‘ম্যাঙ্গো’ মনোজিতের প্রভাবের কাছেই কি চুপ ছিলেন তিনি?