শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া না হলেও বর্ধমানে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সভার জন্য শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যজুড়ে চলছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার আগেই ১০ দিনের বঙ্গ সফরে এসেছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সঙ্ঘের ১০০ বছর উদযাপন উপলক্ষে কী কী কর্মসূচি নেওয়া যায়, কোন বিষয়ে জোর দেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করবেন সঙ্ঘ প্রধান।
১৩ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্ধমান ও সংলগ্ন এলাকায় থাকবেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। সেখানে একাধিক কর্মসূচী রয়েছে তাঁর। এর মধ্যে পূর্ব বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সে মোহন ভাগবতের সভা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বাধে গোলযোগ। জল গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। শুক্রবার সেই মামলারই শুনানি ছিল বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে।
আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার পূর্ব বর্ধমানের সাই কমপ্লেক্সে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সভার জন্য এলাকার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের যেন কোন সমস্যা না হয় তা দেখার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা কঠোর নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে। পাশাপাশি জানিয়ে দিয়েছেন যেহেতু রবিবার মাধ্যমিক পরীক্ষা নেই তাই শর্তসাপেক্ষে এই সভার অনুমোদন দেওয়া হলো। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, কোনও পরীক্ষার্থীর যাতে সমস্যা না হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব মামলাকারীর।
বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানতে চান, “কতজন আসবেন ওই সভায়। যেখানে সভা হচ্ছে, সেটা কি মার্ক করা হয়েছে?” অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতের একটি নির্দেশের কথা উল্লেখ করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময় মাইক ব্যবহার করা যাবে না। তিনি জানান, দুটি স্কুল আছে ওই চত্বরের দুই কিমির মধ্যে।
তবে রাজ্য সরকারের বক্তব্যের বিরোধিতা করে মামলাকারীর আইনজীবী এদিন বলেন, “সাই কমপ্লেক্সের মাঠ ৫০ বিঘা জমি জুড়ে। ১-২ কিমির মধ্যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই কোনও অনুমতি চাওয়ার দরকার নেই। মোহন ভাগবত আসবেন। এসডিও-কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, লাউড স্পিকার ব্যবহার করা হবে। গতকাল জানানো হয়েছে, কোনও সাউন্ড বক্স ব্যবহার করলে সভার অনুমতি বাতিল হবে। অথচ কিছু লিখিত দেওয়া হয়নি। কোনও সাইলেন্স জোন নেই সেখানে। আমরা পরে জানাই, কোনও লাউড স্পিকার ব্যবহার করব না।” মামলাকারীর আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, “৭ লক্ষ ২ হাজার স্কোয়ার ফিটের এলাকায় মাত্র ৫ হাজার স্কোয়ার ফিট এলাকায় এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।”

এরপরেই বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন করেন, “যদি মাইক ব্যবহার না করা হয়? ৫০০ মিটারের বাইরে স্কুল। কোথায় অসুবিধা? মামলাকারীরা জানিয়েছেন মাত্র ১৫ মিনিট হবে সভা।” বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, “৪৫টি মাইক ব্যবহার করা হচ্ছে ওই সভায়। শব্দ নিয়ন্ত্রণ করবে কে?” রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই সংশয়ের কথা জানানোর প্রেক্ষিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা তখন বলেন, “আমি সেই জন্যই জানতে চাইছি, কত বড় সভা। মাইকে কত ডেসিবল ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা দেখার দায়িত্ব কার? কে প্রয়োগ করবে? দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দেখা উচিত। রেগুলেট করে দিন। যাতে শব্দ সীমার বাইরে না যায়।”