সুমনা মিশ্র। কলকাতা সারাদিন।
“পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এখনো হেফাজতে রাখা হয়েছে কেন? এখনো কি পার্থকে রাখার প্রয়োজন হয়েছে?” কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এর কাছে এই প্রশ্নের জবাবদিহি তলব করলো সুপ্রিম কোর্ট।
আবেদনের পর আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এখনও জেলেই রয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একের পর এক মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন তিনি, ফলে তাঁর জামিন ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন পার্থ। এবার নতুন করে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। শুক্রবার ছিল সেই মামলার শুনানি।
ইডি-র মামলায় এর আগেই পার্থকে জামিন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। গত বছরের ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ১ ফেব্রুয়ারি (২০২৫)-এর মধ্যে পার্থকে জামিন দিতে হবে। তার আগে সব গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ কার্যকর হলেও মামলায় জেলেই থাকতে হচ্ছে পার্থকে। সিবিআই-এর মামলা ছাড়াও ইডি-র আরও একাধিক মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছেন তিনি। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সেই সিবিআই-এর মামলাকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে নতুন আবেদন জানিয়েছেন। এদিন, বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটেশ্বর সিং- এর এজলাসে ছিল সেই মামলার শুনানি। আবেদন শুনে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই-কে নোটিস দিয়েছে। কেন পার্থকে হেফাজতে রাখা হয়েছে, তা জানাবে সিবিআই। আগামী ২০ মার্চ এই মামলার শুনানি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাই কোর্টে গত বছর সিবিআই মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ নয়জন জামিনের আবেদন করেছিলেন। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন এই মামলার রায় দিয়েছিলেন গত ২০ নভেম্বর। চারজনের জামিনের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন দুই বিচারপতি।
কিন্তু পার্থ-সহ অন্য পাঁচজনের জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে একমত হতে পারেনি ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকেই জামিন দিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোককুমার সাহার জামিন দেননি। ডিভিশন বেঞ্চ একমত না হতে পারলে, তৃতীয় বেঞ্চে সেই মামলা যাওয়াই নিয়ম রয়েছে। সেই মতো বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে ওই মামলা ওঠে। শুনানির পর বিচারপতি তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। এরপরই জামিন পেতে মরিয়া পার্থ চট্টোপাধ্যার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।