সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
গায়ে অনেক জ্বর। সারেগামাপার সেট থেকে বেরিয়ে ইমন চক্রবর্তী পৌঁছেছিলেন রাজারহাট ক্যাম্পাসে। উদ্দেশ্য একটাই মানুষকে একটু ভালো গান শোনান। পশ্চিম বাংলার মেয়ে ইমন, স্টেজে সব রকমের গান গেয়ে থাকেন। তিনি যেমন লোকসংগীত গান, হিন্দি ছবির গান গান, এমন পশ্চিমবাংলার বুকে দাঁড়িয়ে তিনি বাংলা গান গাইবেন না কেন?
শিল্পী কে বাংলা গান গাইতে দেখি ওখানে উপস্থিত তিন-চারটি ছেলে মিলে এমন মন্তব্য করে বসেন…
ইমন মানুষটি ভীষণ ঠোঁট কাটা। তাই গতকাল যখন তাঁকে, কুড়ি পঁচিশ হাজার লোকের ভিড়ের মধ্যে থেকে তিন চারটি ছেলে হঠাৎ করে বলে বসেন, বাংলা গান শুনবো না হিন্দি গান গাইছেন না কেন? শিল্পী চুপ করে থাকেন নি। বরং যা যা বলেছেন তা সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল। শিল্পীকে তাঁর উত্তরে বলতে শোনা গেল…
তুমি বাংলায় থেকে যদি এই কথাটা বলো, আমি সাহসের সঙ্গে জোড়ের সঙ্গে বলতে পারি, অন্য কোন জায়গা তোমাকে চুলের মুঠি ধরে এখান থেকে বের করে দিত। ভণ্ডামি এখানে করবে না। এই রাজ্য টার নাম বাংলা। বাংলায় থাকছো বাংলায় খাচ্ছ বাংলায় পয়সা রোজগার করছো আর বলছ বাংলা গান শুনবে না? মারাঠি গান শুনো পাঞ্জাবি গান শোনো, সব ধরনের গান শুনে কিন্তু তুমি কে হে তোমার এত বড় সাহস তুমি বলছো বাংলা গান শুনবে না?
শিল্পী জানান, “হাবভাবটা কেমন ছিল বলতো, যে আমি হিন্দি গানটা গাইবো ওরা নাচবে একটা অদ্ভুত আচরণ করছিল এই তিন চারটি ছেলে। আমার খুব অদ্ভুত লাগে বাংলায় থাকবে বাংলায় খাবে কিন্তু বাংলা গান শুনতে এত আপত্তি। আমার শরীর খুব খারাপ ছিল আমি তাও, সেখানে গিয়ে পৌঁছাই এবং ওখানে প্রায় ২০-২৫ হাজার লোক হয়েছিল। আমি কোনদিনই একতরফা গান, মঞ্চে গাই না। সব রকমের গান আমাকে গাইতে শোনা যায়। এটা শুধু বাংলা ভাষা, আমার বা আমাদের বলে না। কেউ যদি এরকম আচরণ করে, আমি দু’চারটে পয়সা পেয়েছি বলে, তাকে কিছু না বলে চলে আসব এই মানুষ আমি নই।”
যদিও এমন ঘটনা ইমনের সঙ্গে প্রথম নয়। এর আগেও একবার শিল্পীর সামনে দাঁড়িয়ে একজন বলেছিলেন যে বাংলা গান শুনবো না। এবং ইমন তখন পরিস্থিতি সামলাতে বলেছিলেন বাংলা গান না শুনলে ‘পাটলী গালি সে নিকাল যা।’ বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে তিনি রবীন্দ্রনাথের গান শোনাতে পারবেন না এই কথা যেন ভাবতেই পারেন না তিনি। সকালের ঘটনার পর ইমন চক্রবর্তী কাছে বলেন…
গতকাল নেহাত আমি পরিস্থিতিটা সামলে নিয়েছিলাম। নইলে ওই তিন চারটে ছেলের অবস্থা খুব খারাপ করতো বাকি দর্শকরা। এত লোক হয়েছিল যে ওদের বেরোবার সুযোগও ছিল না। আমি তো সমাজ মাধ্যমে খুব একটা সক্রিয় নই। আমার সমস্ত পোস্ট আমার টিম দেখে। ওরা আমাকে বলল দিদি একবার তুমি সোশ্যাল মিডিয়া খুলে দেখো। দেখলাম, বেশিরভাগ মানুষই আমার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। এগুলো দেখেও ভালো লাগে।