সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বছর শেষে তৎপর দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা। একদিকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। অন্যদিকে প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল সিবিআই। গত ১ অক্টোবর এই মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আজ, শুক্রবার তাঁর বিরুদ্ধে ৪০ পাতার চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। চার্জশিটে বিস্ফোরক দাবি সিবিআইয়ের, বলা হয়েছে এক হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থীর থেকে টাকা নিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর সঙ্গীরা। চার্জশিটে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও আরও দুজনের নাম রয়েছে।
রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে গ্রেফতারের ৮৮ দিনের মাথায় শুক্রবার দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে পার্থকে মামলার নিয়োগ দুর্নীতির ‘মূল মাথা’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ১০৮০ জন চাকরি প্রার্থীর কাছে থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে চার্জশিটে। তদন্ত চলাকালীন মোট ৪০ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও চার্জশিটে নাম রয়েছে অয়ন শীল ও সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়ের। সিবিআই তদন্তে দাবি, প্রাথমিক টেট নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম উঠে এসেছে। পরবর্তীতে সেই সূত্র ধরেই গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অয়ন শীল এবং সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়। প্রায় আড়াই বছর আগে, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল রাজ্যে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
যদিও নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক মামলায় একাধিকবার জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু জামিন অধরাই থেকে গেছে। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার চার্জ গঠনের পর শুনানিতে আদালতে ইডি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে পার্থ, মানিক , শান্তনু ও কুন্তল ঘোষের যোগাযোগ রয়েছে বলে তথ্য প্রমাণ পেশ করেছে। যদিও ইডির মামলায় পার্থকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল সিবিআই। চার্জগঠনের পরই ১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে জামিন দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিল। তবে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলে ১ ফেব্রুয়ারির আগেই জামিন পেতে পারেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
অন্যদিকে ইডি চার্জশিটে স্পষ্ট করে দিয়েছে কী করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি থেকে পাওয়া কালো টাকা সাদা করছেন। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা দাবি করেছে পার্থ ও তাঁর ঘনিষ্ট অর্পিতা ১০০ কোটি টাকা তছরুপ করেছে। প্রায় ১০০০ চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন পার্থ একাই। তবে সব মিলিয়েই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় চোরাবালিতে তলিয়ে যেতে চলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।