সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
কলিকাতা, সুতানুটি এবং গোবিন্দপুর – জঙ্গলে ঘেরা ছোট্ট তিনটি গ্রামকে নিয়ে জন্ম নিয়েছিল কলকাতা।
যদিও কলকাতার জন্ম নিয়ে নানা মুনির নানা মত। তবে সেই ইতিহাস ঘাঁটতে গেলে কূলকিনারা পাওয়া যাবে না কোনদিন। জোব চার্নকের আমল থেকে তিলোত্তমা কলকাতা রূপ বদলেছে বারে বারে। কখনো ব্রিটিশদের কলিকাতা থেকে ক্যালকাটা। আবার ক্যালকাটা থেকে আমাদের অতি প্রিয় কলকাতা।
আর তিলোত্তমা কলকাতার এই রূপ বদলের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসের পরতে পরতে জুড়ে গিয়েছে নতুন ইতিহাসের পাতা। তৈরি করেছে নতুন ইতিহাস। তৈরি হয়েছে নতুন ঐতিহ্য।
বাংলার নতুন প্রজন্মের জেনারেশন এক্স, জেনারেশন ওয়াই, অথবা একেবারে লেটেস্ট ট্রেন্ডিং জেন জি – তাদের অনেকের কাছেই কিন্তু কলকাতার গৌরবময় ঐতিহ্যের অধ্যায় গুলি অজানা থেকে গিয়েছে।
সেই সমস্ত অজানা গৌরবময় হারিয়ে যাওয়া অধ্যায়কে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার তাগিদ থেকে সোনারপুরের জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুলের বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশন করল সুতানুটি গোবিন্দপুর আর কলিকাতা গ্রাম থেকে আজকের কলকাতা হয়ে ওঠার ঐতিহ্যের ইতিহাস।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সেরা সিবিএসই স্কুলের শিরোপা পাওয়া জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুলের এবারের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের বিষয় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল কলকাতার ঐতিহ্য এবং ক্যালকাটা থেকে কলকাতা হয়ে ওঠার ইতিহাস।
অনুষ্ঠানে স্কুলের প্রিন্সিপাল সুশান্ত দাস বলেন, “শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, সমস্ত ধরনের খেলাধুলো এবং তার পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা যেন নিজেদের যোগ্যতার উদাহরণ তৈরি করতে পারে সেই জন্য সামগ্রিক শিক্ষা দান করার চেষ্টা করি আমরা।”
প্রসঙ্গত সম্প্রতি গোটা দেশের মধ্যে সেরা প্রিন্সিপালের শিরোপাও পেয়েছেন পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপাল সুশান্ত দাস।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুলের অধীনস্থ জ্যোতি শিশু বিহারের প্রিন্সিপালেরা। জ্যোতি শিশু বিহারের প্রিন্সিপাল অন্তরা গুপ্ত।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা তথা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডক্টর পার্থসারথি গাঙ্গুলী বলেন, “পৃথিবীর সমস্ত দেশে একটি শিশু জন্মের পর থেকে যে ভাষায় মা বলতে শেখে সেই ভাষাতেই সে রকেট সাইন্স থেকে শুরু করে যাবতীয় উচ্চ শিক্ষার পড়াশোনা করতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের পরে ভারতবর্ষে এমন একটা সিস্টেম তৈরি হয়ে গিয়েছে যে বহু ভাষাভাষী ভারতবর্ষে বিভিন্ন প্রদেশের শিশুরা যে ভাষায় মা বলে অথবা প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে এই ভাষায় সে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে পারে না।
ইংরেজি বাধ্যতামূলক। এই কারণেই আমার নিজের জেলা দক্ষিন ২৪ পরগনার পাশাপাশি বাংলার সমস্ত প্রত্যন্ত এলাকায় সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে প্রাথমিক স্তর থেকেই ইংরেজি শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার জন্য শুরু করেছিলাম জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুল। এখন আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকেই বিদেশে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে বহু উচ্চ পদস্থ সরকারি দপ্তর অথবা বেসরকারি সংস্থায় যেমন কর্মরত রয়েছেন, ঠিক তেমনভাবেই ডাক্তারি পেশাতেও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”