শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় একটা অ্যান্টি ন্যাশনাল হাবে পরিণত হয়েছে। ওখানে ঘাঁটি গেড়েছে টুকরে টুকরে গ্যাং। এদের সমূলে উৎপাটিত করতে হবে। এভাবেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওমাকু ছাত্রদের চরম হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরেই যেভাবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওমাকু ছাত্ররা, তারপর থেকেই যাদবপুরের এই মাওবাদী সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছেন শুভেন্দু।
গতকাল অর্থাৎ সোমবার আবার যেভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরেই দেশ বিরোধী একের পর এক শ্লোগান উঠেছে বাম এবং অতিবাম ছাত্র সংগঠন গুলির পক্ষ থেকে তার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে ভাজপা। কারণ গতকাল যাদবপুর ক্যাম্পাসের ভিতরেই আজাদ কাশ্মীর এবং প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতার দাবিতে পোস্টার মেরেছিল মাওবাদী কয়েকটি ছাত্র সংগঠন।
আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতর দেশদ্রোহীদের আখড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যান্টি ন্যাশনাল হাব। টুকরে টুকরে গ্যাং। এরকম স্লোগান লিখলেও পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে না। এরা ভোটের সময় বলে, নোট ভোট টু মোদীজি, নো ভোট টু বিজেপি।
এরপরই যাদবপুরে তাঁর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা টেনে এনে শুভেন্দু বলেন, ২০২৩ সালে যাদবপুরে আমার উপর হামলা চালিয়েছিল আরএসএফ। তারা নিজেদের মাওবাদী বলছিল। তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। সেই মামলা এখনও চলছে। ক্যামেরার সামনে এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যেই সকলের সামনে এরা বুক ফুলিয়ে দাবি করছে আমরা মাওবাদী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যেখানে গোটা দেশজুড়ে মাওবাদীদের নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছে তারপরেও কিভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে ওরা নিজেদের মাওবাদী বলে দাবি করছে?
চলতি সপ্তাহেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে মাওমাকুদের পাঠানোর দাবিতে মিছিল করে শুভেন্দু দাবি তুলেছিলেন, আমরা শুধু আজ কর্মসূচি নিচ্ছি এমনটা নয়। ১৬ তারিখে আমরা যাদবপুরে নাগরিক কনভেনশন করব। উচ্চমাধ্য়িক শেষ হলে বাইরে আমরা কাজ করব। লাগাতার জনজাগরণ করব। এই মাকুদের রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে উপড়ে ফেলার কাজ ভারতীয় জনতা পার্টি করবে।
এর আগে ভাজপার প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, যাদবপুর তো চিরদিনই মাওবাদীদের আখড়া। ক্যাম্পাসের ভিতরে কোনও রাজনৈতিক অস্তিত্ব নেই। কিছু পুরনো লোক রয়েছে, যারা তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। আর যারা নতুন ছেলেমেয়েরা যায়, তাদের ওখানে মাথা খাওয়া হয়। দিল্লিতে ওরকম চলেছিল, আজ হিম্মত নেই কিছু করার।

অন্যদিকে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে আজাদ কাশ্মীর লেখা পোস্টার ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক! বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেটের কাছে একটি দেওয়াল লিখনে যেমন আজাদ কাশ্মীরের দাবি তোলা হয়েছে, তেমনই একইসঙ্গে মুক্ত প্যালেস্তাইনের দাবিও তোলা হয়েছে। গ্রাফিতির নিচে লেখা শহুরে মাওবাদীদের সংগঠন পিডিএসএফ-র নাম। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় স্বতোপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে কলকাতা পুলিশ। পিডিএসএফের সদস্য কারা, কারাই বা নেতা, তার খোঁজও শুরু করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তালিকা তৈরির কাজ।