শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টির ভিডিয়ো ঘিরে শোরগোল। ভিডিয়ো পোস্ট করে বাম-তৃণমূলকে একযোগে কটাক্ষ করলেন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোর কথা উঠলে ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ ওঠে। আর এই সব ক্ষেত্রে ছদ্ম ধর্মনিরেপক্ষতা। এক্স হ্যান্ডেলে এই মর্মে পোস্ট করে তোপ দাগলেন সুকান্ত। তাঁর অভিযোগ, যাদবপুরের প্রাঙ্গণে দেবী সরস্বতীর প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও, ইফতার পার্টির আয়োজন হচ্ছে। হিন্দু বিরোধী মতাদর্শে বাম এবং তৃণমূল একজোট হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও-ও পোস্ট করেছেন সুকান্ত।
এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বাংলার সংস্কৃতি সুকান্তর বোঝার কথা নয় বলে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন সুকান্ত। ২৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে ইফতারের আয়োজন চোখে পড়েছে। ভিডিওটি পোস্ট করে সুকান্ত লেখেন, ‘এটাই লিব্যারাল বামপন্থীদের মুক্তচিন্তার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র যাদবপুর! বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে যেখানে বাগদেবী মা সরস্বতীর আরাধনার কথা হলে ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ ওঠানো সিউডো-সেক্যুলারদের ভ্রু কুঞ্চিত হয় কিন্তু এসব কেবলই ধর্মনিরপেক্ষতা মাত্র’!
সুকান্ত আরও লেখেন, ‘সম্প্রতি বাংলাদেশকে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া তৃণমূল পন্থীদের কাছেও বাড়তি অক্সিজেন! সনাতন হিন্দু বিরোধী মতাদর্শ অক্ষুণ্ন রেখে বাম-তৃণমূল অজৈব জোটের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে দেবী সরস্বতীর প্রবেশ নিষিদ্ধ কিন্তু এসবে মুখে কুলুপ’!
সংসদের বাইরেও বিষয়টি নিয়ে আজ মুখ খোলেন সুকান্ত। তাঁর কথায়, “তৃণমূল এবং বামপন্থীরা কতটা হিপোক্রিট, এটা তার প্রমাণ। যারা সরস্বতী পুজো হতে দেয় না, তারা সর্বতোভাবে সাহায্য় করে। এখানে কিন্তু দু’জনের মধ্যে কোনও শত্রুতা নেই! একসঙ্গে মিলে করছে। সব ছদ্ম সেকুলাররা একসঙ্গে ইফতার পার্টি করছে। ইফতার পার্টি কি সেকুলার, আর সরস্বতী পুজো সাম্প্রদায়িক। এরা কমিউনিস্ট সেজে থাকে। এই কি ধর্মনিরপেক্ষতা! এদের একটাই কাজ, ইসলামিকরণ, জেহাদিকরণ।”
এর পাল্টা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই পুজো হয়, ইফতারও হয়। যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পুজো হতে পারে, ইফতার হতে পারে, বড়দিনের অনুষ্ঠান হতে পারে। শিখদের জন্যও যদি কোনও অনুষ্ঠান হয়, ছাত্রছাত্রীরা পালন করলে সমস্যা কোথায়? আমাদের রাজ্যে এগুলো হবে। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির বোঝার কথা নয় এগুলো। উনি বুঝতে চানও না। ওঁর যে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, সেটা ইফতার বাধা দিতে চায়। আমরা চাই না।”
এ বিষয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলছেন, “বাংলা সব ধর্মের, সকল সংস্কৃতির মানুষের! জননেত্রী যেভাবে দুর্গাপুজোর সময় যেভাবে দুর্গাঠাকুরের চক্ষুদান করেন, বাড়িতে কালীপুজো করেন একইভাবে ইদের সময় ইদের পরব পালন করেন। আবার ২৫ ডিসেম্বর চার্চে গিয়ে গডের কাছে মা-মাটি-মানুষের জন্য প্রার্থনা করেন। আমাদের সংবিধান সর্ব-ধর্ম সহিষ্ণুতার কথা বলে, সংবিধান বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের কথা বলে। তাদের বিরোধিতা করে এই বিজেপি। তাই ওদের নিয়ে যত কম বলা হয় তত ভাল।”