শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
“রাজ্য পুলিশের ওপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নেই। এলাকায় স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প দরকার।” মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে পৌঁছে ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করে এমন বিষ্ফোরক অভিযোগ করলেন সুকান্ত মজুমদার
ধূলিয়ানে পৌঁছে নিগ্রহ, ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ঘরছাড়ারা। নিজেদের অবস্থা-অত্যাচারের বর্ণনা দেন তাঁরা।
এক মহিলা বলেন, “আমাদের কথা শুনলে শিউরে উঠবেন। সারা রাত তাণ্ডব চলেছে। ঘর বাড়ি সব শেষ কিচ্ছু নেই। কী করে বাঁচব আমরা?” পুলিশ যে কোনও পদক্ষেপই করেনি, সেটাও তাঁরা জানিয়েছেন। এক মহিলা বলেন, “আমরা কেঁদে কেঁদে মরে গিয়েছে। পুলিশ সব জানে, তাও পুলিশ একটি বারের জন্যও আসেনি। আমরা যখন মারা যাব, তখন কি পুলিশ আসবে?”
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক অভিযোগ সুকান্তর। তাঁর দাবি, “মমতার নির্দেশেই মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ডিএম বাধ্য হয়ে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাচ্ছে, অথচ তাদের ঘরবাড়িটাই পুড়ে গিয়েছে। এখনও কেন আসেননি মুখ্যমন্ত্রী? মুখ্যমন্ত্রীর আসা উচিত ছিল। ইমামদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ওদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে, মুর্শিদাবাদে কোথায় কাড়া হয়েছে জানি না। সবাই ছি ছি করছে, এত বাজে প্রশাসক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষের আস্থা ফেরাতে ওনার আসার দরকার ছিল।”
সুকান্ত মজুমদার নিগৃহীতদের আশ্বস্ত করেন। তিনি আশ্বাস দেন, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের পাশে রয়েছে। তাঁদের অভাব অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। এলাকার নিরাপত্তায় বিএসএফ আরও বেশি করে মোতায়েন করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সুকান্ত বলেন, “রিফিউজি ক্যাম্পে গিয়েছিলাম, তখন প্রত্যেকেরই দাবি ছিল, এলাকায় স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প দরকার। রাজ্য পুলিশের ওপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নেই। আমি রাজ্য সরকারকে আবেদন করব, এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্থায়ী ক্যাম্প করার রাজ্য যাতে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করে।” উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে এই এলাকা থেকেই সফর শুরু করেছিল জাতীয় মহিলা কমিশন।
সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে সুকান্ত বলেন, “চিফ সেক্রেটারিকে আমি নিজে আমার প্যাডে চিঠি লিখব, যে ৫৬ খানা দোকানের মালিককে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করা হয়। মূর্তি-বিগ্রহ ভাঙা হয়েছে। যারা অন্যের ধর্মকে সম্মান করতে পারে না, নিজের ধর্মকেও সম্মান করেনা।” জাফরাবাদেও যাওয়ার কথা রয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতির। নিহত বাবা-ছেলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর।
গত ১২ এপ্রিল সামশেরগঞ্জে হিন্দুদের মন্দিরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। ৫৬টি হিন্দ দেবদেবীর মূর্তি ভেঙে লুঠপাঠ চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই মন্দির পরিদর্শন করেন সুকান্ত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “অন্যের ধর্মকে সম্মান না করতে পারলে নিজের ধর্মকেও সম্মান করতে জানে না। মানুষকে বোকা বানাতে দীঘায় ৩০ তারিখ নকল মন্দির উদ্বোধন করছেন মমতা। ওই দিনই এখানে আসল মন্দির প্রতিষ্ঠা করুন। নকল হিন্দুদের দিয়ে কাজ হবে না।”