শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
তৃণমূলের জাতীয় কর্ম সমিতির বৈঠকে বাংলার দায়িত্ব না দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল সংসদীয় কমিটির দায়িত্ব। এবার রাজ্য রাজনীতিতেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠদের বেশ কয়েকজনকে সরানো হল।
২০২৬ এর বিধানসভা ভোট। তার আগে সংসার সাজাতে শুরু করেছে তৃণমূল। একদিকে বিজেপি যখন সদস্য সংগ্রহ করতে নাকানিচোবানি খাচ্ছে তখন তৃণমূলের একের পর এক বড় বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এবার সামনে এল প্যানেলিস্টদের তালিকা। অর্থাৎ যারা তৃণমূলের হয়ে বিভিন্ন টিভিতে গিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দেবেন সেই তালিকা প্রকাশ করা হল।
আর সেই তালিকায় তাৎপর্যপূর্ণভাবে কয়েকটি পরিচিত মুখ বাদ পড়েছে। তার মধ্য়ে একজন হলেন অরূপ চক্রবর্তী। তিনি আবার দিন দুয়েক আগে ফেসবুকে একটা পোস্ট করেছিলেন, লেফট জব। অর্থাৎ তৃণমূলের মুখপাত্রের যে কর্তব্য তিনি পালন করতেন সেটাতে তিনি আর নেই। তবে কেন কয়েকজনকে সরানো হল তা নিয়ে নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। অনেকের মতে অভিষেকপন্থীদের সেই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এবারের তালিকায় বাদ পড়েছেন অরূপ চক্রবর্তী, ঋজু দত্ত, সুদীপ রাহা, কোহিনুর মজুমদার। আর নতুন তালিকায় যুক্ত হয়েছেন জয়া দত্ত, মোশারফ হোসেন, সন্দীপন সাহারা।
তবে এসবের মধ্যে একটা নতুন চর্চা মাথাচাড়া দিচ্ছে দলে। দল কি এখন দ্বিধাবিভক্ত? একদিকে মমতা পন্থীরা আর অপরদিকে অভিষেকপন্থীরা? আর এবারের জাতীয় কর্মসমিতির মিটিংয়ের পরে দেখা গেল অত্যন্ত সুকৌশলে যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে সেখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন মমতাপন্থীরা। আর যারা এতদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলে ধরার জন্য নানা পথ নিয়েছিলেন তাঁদের কার্যত পেছনের বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। একাধিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের। সেই জায়গায় একাধিক নতুন মুখ আনা হয়েছে যাঁরা কেবলমাত্র ও একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁদের বিশ্বাসকে প্রমাণ করেছেন।
এদিকে সন্ধ্যা হলেই টিভিতে টিভিতে শুরু হয়ে যায় বিতর্ক সভা। মূলত দলের তরফেই নির্দিষ্ট কিছু নামকে ঠিক করা হয়। তারাই যান এই সমস্ত ডিবেট শো তে। এবার ঠিক হয়েছে রাজ্যের সার্বিক বিষয় নিয়ে যাঁরা প্রতিক্রিয়া দেবেন বলে বলা হয়েছে তারা টিভিতে যেতে পারবেন। এছা়ড়াও পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কলকাতার কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী, শ্রমিক নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্য়ায়, দলের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য, টিএমসিপির প্রাক্তন সভানেত্রী জয়া দত্ত, মৃত্যুঞ্জয় পাল. সন্দীপন সাহা, প্রদীপ্ত মুখোপাধ্যায়, ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন, প্রাক্তন বিধায়ক দীনেশ বাজাজ ও তন্ময় ঘোষ।