সুষমা পাল মন্ডল। কলকাতা সারাদিন।
বাংলায় আসছে বিপুল বিনিয়োগ। বাংলা জুড়ে ২৩ জেলায় একের পর এক প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন দেশ-বিদেশের শিল্পপতিরা। সেই সঙ্গে রাজ্যে শিল্পায়নের জন্য তৈরি হচ্ছে একাধিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক।
বাংলা জুড়ে শিল্পায়নে ঐতিহাসিক ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরুলিয়ায় রঘুনাথপুরে দশটি জমি শিল্পের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। পুরুলিয়া, দুর্গাপুর, পানাগড়ে একাধিক জমি চিহ্নিত হয়েছে। লক্ষ্য শিল্পায়ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে একাধিক সংস্থাকে জমি দেওয়া হবে রাজ্যের তরফে। রাজ্যে কয়েকশো কোটি টাকার বিনিয়োগ হচ্ছে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।
কোচবিহার হাওড়া , মুর্শিদাবাদ,ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুর প্রত্যেকটি জেলাতে হবে নয়া শিল্প।পুরুলিয়া, দুর্গাপুর ,পানাগড়ে একাধিক সংস্থাকে জমি দেওয়া হচ্ছে। প্রচুর কর্মসংস্থান হবে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। বাংলায় শিল্পের জন্য আরো অনেকে জমি চাইছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ইস্পাত শিল্পে বাড়বে কর্ম সংস্থান। ইতিমধ্যে ১০টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক করার জন্য জমি দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে। হিডকো-র সঙ্গে পিপিপি মডেলে নিউটাউনে জমি অধিগ্রহণ হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বুধবার জানান, নবান্নে ক্যাবিনেট বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক আছে সেখান থেকে দশটি প্লট একাধিক সংস্থাকে দেওয়া হবে নতুন শিল্প করার জন্য। কারণ রাজ্য সরকার চায় দ্রুত শিল্পায়ন এবং আরো কর্ম সংস্থানের সুযোগ।
এর ফলে ২৫ হাজার কোটিরও বেশি বিনিয়োগ আসবে রাজ্যে। কোম্পানিগুলো যথেষ্ট বড় বড় সংস্থা। এই সংস্থাগুলোই অধিকাংশই স্টিল ইন্ডাস্ট্রি। ফলে সত্তর হাজারেরও বেশি মানুষ রাজ্যের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। এর পাশাপাশি জেলায় জেলায় এমিসেমির অধীনে থাকা মোট ৪৩ টি মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রি তৈরি তৈরি করার বিষয়টিও মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে।
নবান্নে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দ্রুত শিল্পায়ন আমাদের লক্ষ্য। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ১০টি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। পুরুলিয়া, পানাগড়, দুর্গাপুরে একাধিক সংস্থাকে জমি দেওয়া হয়েছে। কর্মক্ষেত্র তৈরি সরকারের লক্ষ্য। কয়েকশো কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে একাধিক সংস্থাকে জমি দেওয়া হয়েছে। বাংলায় শিল্পের জন্য আরও অনেকে জমি চাইছেন।” শিল্পায়নের ফলে রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে কর্মসংস্থান। ইস্পাত শিল্পে কর্মসংস্থান আরও বাড়বে বলেই আশা মুখ্যমন্ত্রীর। মমতা এদিন আরও জানান, রাজ্যের প্রায় প্রত্যেক জেলায় একটি করে বড় শপিং মল বা বিগ মার্কেট খোলা হবে। যেখানে হস্তশিল্পীরা নিজের হাতে তৈরি জিনিসপত্র সরাসরি ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। তার ফলে বাড়বে আয়।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান,রাজ্য সরকার নিজের উদ্যোগে ২৩ টি জেলায় ২৩ টি শপিংমল অথবা বিগ মার্কেট এর মত ঘরানায় বাজার তৈরি করবে। এই বাজার গুলি তৈরি করতে রাজ্য সরকার ১ একর জমি বিনা পয়সায় দেবে কিন্তু বেসরকারি উদ্যোগে এই মার্কেটগুলো তৈরি হবে এবং তার পরিবর্তে রাজ্য সরকার দুটি ফ্লোর নেবে যাতে সেখানে সেলফ হেল্প গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন স্টল করে তার উপাদান গুলি সেখানে বিক্রয় করার ব্যবস্থা করা যায়।দিঘাতে জগন্নাথ মন্দির যেখানে হয়েছে তার পাশে একটি মার্কেট তৈরি করার জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান। যাতে যারা দীঘায় এবং জগন্নাথ মন্দিরে যাবেন তারা ওই মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারেন।
এদিন দিঘা নিয়েও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ভালো জমি পেলে দিঘায় বড় বাজার তৈরি হবে। বলে রাখা ভালো, এমনিতেই দিঘায় সারা বছরই পর্যটকের আনাগোনা লেগে থাকে। সম্প্রতি আবার সৈকতনগরীতে জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার ফলে আরও পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে বলেই আশা। তার ফলে বাড়বে কেনাকাটা। উপকৃত হবেন পর্যটন ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। এছাড়া নিউটাউনে বিশ্ব অঙ্গন পার্ক তৈরির কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন মমতা
আগামী সপ্তাহে উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সেকথা নিজেই জানান তিনি। এবারের উত্তরবঙ্গ সফরে ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।
তিনি বলেন, ‘আগামী ১৯ মে শিল্পমহলকে নিয়ে সিনার্জিক অনুষ্ঠান রয়েছে। পরদিন ২০ মে, ওদলাবাড়িতে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা প্রদান অনুষ্ঠান। ২১ মে উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক।” বৈঠকে থাকবেন দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের প্রতিনিধিরা থাকবেন। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহের প্রতিনিধিরা ভারচুয়ালি যোগ দেবেন বৈঠকে। ২২ মে কলকাতায় ফিরে আসার কথা তাঁর। বলে রাখা ভালো, এর আগে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহে যান মুখ্যমন্ত্রী।