সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
ফের বোলপুরের IC কে বেলাগাম হুমকি। অনুব্রত মণ্ডলের পর এবার বোলপুরের আইসি লিটন হালদারকে হুমকি বীরভূমের TMCP সভাপতি বিক্রমজিৎ সাউয়ের। তিনি ফেসবুক লাইভে বলেন, “ছিলে তো সিআইডিতে গ্যারাজ পোস্টিং, সরকার দয়া করে তোমাকে পোস্টিং দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, এই আইসি দুর্নীতিগ্রস্ত। অনুব্রত নামক ব্র্যান্ডকে দমানোর চেষ্টা করছেন। বালি, কয়লা, পাথর মাফিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলার অভিযোগ করেছেন তিনি।
বিক্রমজিতের যে ভিডিও বার্তা সামনে এসেছে, তাতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এই আইসি দুর্নীতিগ্রস্ত। বোলপুর থানার আইসি প্রত্যেক বালি ও পাথর মাফিয়ার সঙ্গে যোগসূত্র বজায় রেখে কাজ করে। এই লিটন হালদার অনুব্রত মণ্ডল নামক ব্র্য়ান্ডকে দমানোর চেষ্টা করছে। লিটন হালদারের দম থাকলে, বুকের পাটা থাকলে সত্যি কথাটা জানাও। বালিঘাট থেকে বোলপুরের সাধারণ মানুষকে নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলেছো, তুমি অুব্রত নামক শক্তিকে নিজের অপকর্মের মাধ্যমে দমানোর চেষ্টা করেছো। তোমার অপকর্মে অনুব্রতর শক্তি দমে না। এডিটিং করে ভয়েস তুলে আনার, এডিটিং করে সেই ভয়েস মার্কেটে দেওয়ার চেষ্টা করেছো।”
রীতিমতে হুঁশিয়ারের সুরে আইসি-র উদ্দেশে বিক্রমজিৎ আরও বলেন, “দম থাকলে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং বীরভূম জেলা তথা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে একটা এফআইআর করে দেখিও লিটন হালদার। তুমি দুর্নীতিপরায়ণ, কত লোকের থেকে কী ভাবে টাকা নিয়েছো, নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি কী করে অনুব্রতর নামে তুলে দিতে চেয়েছিলে, সমস্ত তথ্য়প্রমাণ আছে আমাদের কাছে। ওই রেকর্ডিং যে অনুব্রতর, তা প্রমাণ করতে পারবে? দম আছে? ছিলে তো সিআইডি-তে, গ্যারেজ পোস্টে। দয়া করে দল, সরকার এই জায়গায় এনেছে। প্রত্যেক ক্ষেত্রে সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলা উচিত ছিল তোমার। তুমি মূর্খ। ভাবছিলেন ডালে ডালে চলবে, তোমাদের শিরা-উপশিরায় আমরা চলি।”
এর পর আইসি-কে চ্যালেঞ্জ করে বিক্রমজিৎ বলেন, “লিটন হালদার, তোমাকে চ্যালেঞ্জ করলাম। তুমি আইসি, সরকারি কর্মী। আমি কোনও অন্য়ায় করে থাকলে শাস্তি দিও।” বিক্রমজিতের এই ভিডিও বার্তা সামনে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে।

গতকালের পর আজ, ফের সমন অনুব্রতকে। রবিবার সকাল ১১ টায় বোলপুর এসডিপিও অফিসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। গতকাল সমন পাঠানো হলেও শেষ মুহূর্তে হাজির হন অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীরা। এরপর ফের অনুব্রত মণ্ডলকে সমন পাঠানো হয়। সকাল ১১ টায় হাজিরার নির্দেশ থাকলেও এদিন দু’ঘন্টা কেটে গেলেও হাজিরা দিলেন না অনুব্রত। সূত্রের খবর, আগামীকাল আগাম জামিনের আবেদন করতে পারেন ‘বীরভূমের বাঘ’।
মাত্র কিছুক্ষণ আগে বোলপুর SDPO অফিসে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতা গগন সরকার ও অনুব্রত মন্ডলের আইনজীবী বোলপুর SDPO অফিসে আসেন। সেখানে এসে ওই তৃনমূল নেতা দাবি করেন, অনুব্রত মন্ডল সেদিন কোন ফোন করেনি, AI এর মাধ্যমে ওই ফোন কল করা হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপির যোগসূত্রের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। তৃণমূল নেতার এই মন্তব্যের পর রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গেছে।