সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
জহর সরকারের ছেড়ে দিয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ পদ। আর সেই পদে আসীন হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভার সাংসদ হলেন। আজ, শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এই খবর চাউর করা হয়েছে।
তবে আজ এই ঘটনার পর ঋতব্রতকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলের নেতারা। আজ এই জয়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। আর বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। শংসাপত্র পাওয়ার মুহূর্তের একাধিক ছবি নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল পোস্ট করে ঋতব্রত উরুগুয়ের লেখক ও সাংবাদিক এডুয়ার্ডো গ্যালেআনোর লাইন উদ্ধৃত করে লিখেছেন, ‘ইতিহাস কখনও বিদায় বলে না। বলে, পরে দেখা হবে’। ২০১৪ সালে ঋতব্রতকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল সিপিএম। কিন্তু নানাবিধ অভিযোগে তাঁকে ২০১৭ সালে দল থেকে বহিষ্কার করে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তার পর থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভায় দলহীন সাংসদ হয়েই থাকতে হয়েছিল তাঁকে। ২০২০ সালে রাজ্যসভায় সাংসদ হিসাবে মেয়াদ শেষের পরে ঋতব্রত যোগ দেন তৃণমূলে। এ বার তিনি তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন।
ইতিমধ্যেই এনডিএ সরকারের ক্যাবিনেটে পাশ হয়েছে ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল। যার বিরোধিতা করেছেন দেশের তামাম বিরোধী দলের নেতারা। এই আবহে জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও চাইছেন সর্বভারতীয় নেতারা। এই দুটি বিষয় নিয়েই আজ মুখ খোলেন ঋতব্রত। তিনি বলেন, “এই এক দেশ, এক ভোট আসলে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর আক্রমণ। যা বিজেপি করে চলেছে। এটা কিছুতেই চলতে পারে না। আর দেশের বিশিষ্ট নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতৃত্বে চাইছেন। কারণ বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে একমাত্র প্রমাণিত তৃণমূল।”
রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন প্রাক্তন আইএএস জহর সরকার। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার কথা চিঠি লিখে জানান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তখন থেকেই আলোচনা চলছিল, কাকে রাজ্যসভায় পাঠাবে তৃণমূল কংগ্রেস? তখন নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছিল।
গত ৭ ডিসেম্বর সেই গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে এক্স হ্যান্ডলে রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আসনে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আর কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। তাই ১৩ ডিসেম্বর, শুক্রবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঋতব্রতকেই জয়ী ঘোষণা করা হল। তিনি রাজ্যসভার নতুন সাংসদ।