সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
ডেস্টিনেশন বেঙ্গল। বেঙ্গল মিনস বিজনেস। বাংলায় শিল্পায়নের পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মসংস্থানের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এই স্লোগানে ভরসা রেখেই বাংলায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখালো, আরও একটি মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতা সংস্থা আজ নবান্নে মমতার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করলেন কলকাতায় নিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্যাথারিন জাইলস দিয়াজ।
গতবছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফরের মধ্যেই তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন কলকাতায় মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর সংস্থা গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজের সেমিকন্ডাক্টর হাব তৈরির জন্য। চলতি বছর বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট বা বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চেও উপস্থিত হয়ে কলকাতায় নিজেদের সেমিকন্ডাক্টর হাব তৈরীর বিষয় বিস্তারিত জানিয়েছিলেন গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজের কর্ণধারেরা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আলাদা করে বৈঠকে বসেন তাঁরা।
এবারে কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর হাব তৈরির কাজ কতখানি এগোল সেই বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক তথ্য আদান-প্রদানের জন্য আজ নবান্নে মমতার সঙ্গে কলকাতায় নিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্যাথারিন জাইলস দিয়াজ দেখা করেন বলে জানা গিয়েছে।
মার্কিন কনসাল জেনারেলের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সল্টলেক সেক্টর ফাইভ এর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ইতিমধ্যেই গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজকে ১৩০০০ স্কোয়ার ফিট জায়গা দিয়েছে রাজ্য সরকার। যেখানে প্রাথমিকভাবে নিজেদের কাজ শুরু করে দিয়েছে মার্কিন এই সংস্থা। তবে এর পাশাপাশি আরো ১৯ হাজার স্কোয়ার ফিট ওই একই জায়গায় অর্থাৎ সল্টলেক সেক্টর ফাইভ এর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে দেওয়ার জন্য গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজের পক্ষ থেকে যে অনুরোধ করা হয়েছে, সেই বিষয়েও কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার।
তবে এর পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে সেমিকন্ডাক্টর এবং মাইক্রোচিপ তৈরির ক্ষেত্রে প্রথম সারির সংখ্যা গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলায় বেশ কয়েকটি প্রকল্প তৈরীর বিষয় প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় একটি পাওয়ার ইলেক্ট্রনিক ইকোসিস্টেম তৈরির জন্য গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও বাংলার যুব সম্প্রদায়ের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর পড়াশোনা এবং কর্মসংস্থানের জন্যও গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজ ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করার বিষয়ক জানান কলকাতায় নিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেলকে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন খুব তাড়াতাড়ি বাংলায় গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টার পলিসি তৈরি করবে রাজ্য সরকার। যার জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা।
বাংলায় আসছে নতুন বিনিয়োগ
তবে শুধুমাত্র গ্লোবাল ফাউন্ড্রিজের সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট নয়, বাংলা তথা কলকাতার সামগ্রিক পরিকাঠামো উন্নয়ন দেখার পরে কলকাতায় আরও একটি সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান তৈরির জন্য বিশ্বের প্রথম সারির আরেক সংস্থা স্যানটেক গ্লোবাল বিশেষভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে আজ মুখ্যমন্ত্রীকে জানান কলকাতায় নিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্যাথারিন জাইলস দিয়াজ। এই প্রস্তাব কি স্বাগত জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

মমতা জানান, বিশ্বের প্রথম সারির এই সমস্ত প্রযুক্তি সংস্থাগুলি যত বেশি করে বাংলায় আসবে, তার ফলে কলকাতাকে কেন্দ্র করে বাংলায় একটি সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেম করে উঠবে। যা একদিকে বাংলার সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি যুব সম্প্রদায়ের জন্যে বাড়তি কর্মসংস্থানের দিশা দেখাবে।