বিতস্তা সেন। কলকাতা সারাদিন।
“পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করেছিল। আমি এখানে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। সব মন্দির ঘুরে দেখেছি।” কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতিতে মহেশতলার রবীন্দ্র নগর থানা এলাকা ঘুরে দেখে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত ১১ জুন মন্দিরের সামনে তুলসি মঞ্চ স্থাপন নিয়ে ২ গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল সেখানে। ভাঙচুর হয়েছিল বাড়ি, ঘর, গাড়ি, দোকান। আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ ও পুলিশের গাড়িও। সেই ঘটনায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে বুধবার আদালতের অনুমতি নিয়ে রবীন্দ্রনগর থানা চত্বরে যান শুভেন্দু। অভিযোগ, সেখানে মহিলাদের সামনে রেখে শুভেন্দুকে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল।
বুধবার বিকেল ৩টে নাগাদ মহেশতলা পৌঁছন শুভেন্দু অধিকারী। এর পর একে একে আক্রান্ত মন্দিরগুলি ঘুরে দেখেন তিনি। আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘুরে দেখেন আক্রান্তদের বাড়ি। শেষে যে জায়গায় তুলসি মঞ্চ স্থাপন নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত সেই শিব মন্দিরে যান বিরোধী দলনেতা। ফুল দিয়ে শিবলিঙ্গের আরাধনা করেন। এর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, “পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করেছিল। আমি এখানে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। সব মন্দির ঘুরে দেখেছি। একটা মন্দিরের সামনে কয়েকজন মহিলা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। আমি দূর থেকে প্রণাম করে বেরিয়ে গিয়েছি। সব ভিডিয়োগ্রাফি করা আছে। কোর্টকে দেখাব। আমাকে এভাবে ভাইপোবাবু আটকাতে পারবে না। এখানে আক্রান্তরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা এখানে সংখ্যায় কম। তাঁরা ১১ তারিখের ঘটনার বিচার চান।”
বিরোধী দলনেতা বলেন, “এইজন্যই পশ্চিমবঙ্গের লোক রাষ্ট্রপতি শাসন চাইছে। আমিও বলি, রাষ্ট্রপতি শাসনে নির্বাচন না হলে, এই এলাকার লোককে লোকসভা ভোটেও ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও ভোট দিতে দেওয়া হবে না। প্রত্যেকটা হিন্দু এখানে অসুরক্ষিত। সবার সঙ্গে দেখা করেছি। আহতদের বাড়িতে গিয়েছি। জোর করে অনেক দোকান বন্ধ করেছে। এখানকার মানুষকে বলে যাব, ইনসাফ বিচার আপনারা পাবেন। আপনাদের বিচার পাওয়ার জন্য, এলাকার শান্তি রাখার জন্য বিরোধী দলনেতা যা করার করবে। আইনে মধ্যে থেকে করবে। পুলিসকে শুধু বলব, রাজীব কুমার ও ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিসকে, তারা ভাইপোর নির্দেশে যেটা করলেন, সরাসরি কোর্টকে চ্যালেঞ্জ করলেন। আমি পুরো ভিডিও করতে করতে এসেছি, আমি হাইকোর্টে ভিডিয়ো জমা দেব। শিবমন্দিরে গিয়েছি, বজরং বলির মন্দিরে গিয়েছি। একটা মন্দিরের সামনে ওনারা কিছু মহিলাকে রেখেছিলেন, আমি বাইরে থেকে প্রণাম করেছি। কোনও ঝামেলায় যাব না। আমি এখানকার পীড়িত মানুষদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। তাঁদের বাড়ি থেকে বেরোতে দেওয়া হয়নি, ধমক দেওয়া হয়েছে। তাও তাঁরা বেরিয়ে কথা বলেছেন। আমার সঙ্গে চারজন আহত দেখা করেছে। ইতিমধ্যে আমি গাটুলিয়াতে বিজেপি পার্টি অফিসে ডেকে ২৭ জনের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দিয়েছি।”
গত ১১ জুনের ওই ঘটনার পর থেকে মহেশতলার বিস্তীর্ণ এলাকায় জারি ছিল ১৬৩ ধারা। বন্ধ ছিল ইন্টারনেট। ওই ঘটনায় প্রায় ৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হিংসার ঘটনার পর রবীন্দ্র নগর থানার আইসি ও মহেশতলার এসডিপিও বদলি করেছে রাজ্য প্রশাসন।