সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
কলকাতা শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যে এবার দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছে কলকাতা পুরনিগম (KMC)। সদ্য অনুমোদিত নতুন বিজ্ঞাপন নীতিতে প্রথমবারের মতো শহরের প্রতিটি রাস্তা ও এলাকাভিত্তিক বিজ্ঞাপন পরিচালনার দায়িত্ব নির্দিষ্টভাবে তুলে দেওয়া হচ্ছে একেকটি সংস্থার হাতে। এদের কাজ হবে বিজ্ঞাপন স্থাপন ও বেআইনি হোর্ডিং বন্ধ রাখা—দুই দিকই সামলানো।
বেআইনি বিজ্ঞাপনে লাগাম
নতুন এই নীতির ফলে, কলকাতার রাস্তাঘাটে লাগানো বেআইনি হোর্ডিং ও ব্যানার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শুধু দৃশ্যদূষণই নয়, নাগরিক নিরাপত্তা রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে আর ল্যাম্প পোস্ট, সিগন্যাল পোস্টে ইচ্ছেমতো বিজ্ঞাপন লাগানো যাবে না। এসবের জন্য মেয়র পারিষদের বৈঠকে অনুমোদন নিতে হবে।
ডিজিটাল বিজ্ঞাপনকে গুরুত্ব
হোর্ডিং ও ব্যানারের সংখ্যা কমিয়ে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, শহরের ৪০০-র বেশি স্ট্রিট হোর্ডিংকে ধাপে ধাপে মনোপোল করে দেওয়া হবে, যার ৪০-৫০ শতাংশ ডিজিটাল হোর্ডিংয়ে রূপান্তরিত হবে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করলে বিজ্ঞাপনদাতারা পেতে পারেন বিশেষ ছাড়ও।
সমস্ত বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে কেএমসি
পুরনিগম জানিয়েছে, শহরের সকল সরকারি বিজ্ঞাপন স্থান এখন থেকে KMC-র এক্তিয়ারভুক্ত। এমনকি রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের অধীনে থাকা বিজ্ঞাপন স্পটগুলোও ইতিমধ্যে নিজেদের অধীনে নিচ্ছে KMC। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনী আয়ের ৫০ শতাংশ নেওয়া হবে পুরনিগমের তহবিলে।
কীভাবে কাজ করবে নতুন নীতি?
প্রতিটি রাস্তা ধরে আলাদা করে টেন্ডার করা হবে।
যে সংস্থা টেন্ডার পাবে, তার দায়িত্বেই থাকবে সেই রাস্তায় বৈধ বিজ্ঞাপন স্থাপন ও বেআইনি বিজ্ঞাপন অপসারণ।
KMC ঠিক করে দেবে বিজ্ঞাপনের আয়তন, দূরত্ব ও ধরণ।
পুরনো চুক্তি শেষ হলে, নতুন নীতির ভিত্তিতে নতুন চুক্তি হবে।
ভবিষ্যতের দিশা
নতুন এই নীতির লক্ষ্য শুধুমাত্র শহরের দৃশ্যদূষণ রোধ নয়, বরং আধুনিক, পরিবেশবান্ধব ও নিয়ন্ত্রিত বিজ্ঞাপন ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত কলকাতা গড়ে তোলা।