সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
বাংলায় কথা বলার অপরাধে বাংলাদেশী সন্দেহে বাংলার বাসিন্দাদের পুলিশের হাতে হেনস্থার শিকার হতে হল BJP শাসিত ডাবল ইঞ্জিন ওড়িশায়। আধার কার্ড রেশন কার্ড এবং ভোটার কার্ড সহ অন্যান্য নথিপত্র দেখানো সত্বেও। পূর্ব মেদিনীপুর এবং মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা এই বাংলাভাষী বাঙালিদের চরম হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল ওড়িশার BJP সরকারের বিরুদ্ধে। বাধ্য হয়ে স্থানীয় পরিচিতদের সাহায্যে ভিডিও করে মমতার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন ওড়িশায় ডাবল ইঞ্জিন BJP সরকারের পুলিশের হাতে আটক ১০ বাঙালি হকার।
গত বেশ কয়েক মাস ধরেই দেশের বিভিন্ন BJP শাসিত ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যে শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার অপরাধে বাংলাদেশি অথবা রোহিঙ্গা সন্দেহে কখনো গ্রেফতার কখনো নির্যাতন আবার কখনো বা বিএসএফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতের সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ছেড়ে দিয়ে আসার মত ঘটনা ঘটেছে বারে বারে। আগেই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের মুখ্য সচিব পর্যন্ত ওড়িশা সহ দেশের প্রায় সবকটি BJP শাসিত ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের মুখ্য সচিবদের চিঠি দিয়ে এভাবে বাংলায় কথা বলার অপরাধে বাঙ্গালীদের হেনস্থা বন্ধ করার জন্য সচেষ্ট হতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো প্রতিবেশী ওড়িশায়।
ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর প্রক্রিয়ার আবহে শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার অপরাধে বাংলাদেশি সন্দেহে মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব মেদিনীপুরের ১০ ফেরিওয়ালাকে আটক করেছে BJP শাসিত ওড়িশা পুলিশ। থানায় কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পরও বিস্কুট ছাড়া কিছু খেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পেশার তাগিদে ওড়িশা যান পূর্ব মেদিনীপুরের ৫ জন ও মুর্শিদাবাদের ৫ জন ফেরিওয়ালা।
জানা গিয়েছে, বাংলার ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে ওই রাজ্যে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে যুক্ত। ওড়িশার জাজপুর টাউন থানা এলাকায় একটি বাড়িতে তাঁরা ভাড়া থাকতেন। সোমবার রাতে কাজ সেরে ভাড়া বাড়িতে খেতে বসেছিলেন তাঁরা। সেইসময় পুলিশ এসে বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদের আটক করে। থানায় নিয়ে যায়। নথিপত্র যাচাইয়ের নামে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ বাংলার ওই ফেরিওয়ালাদের। তাঁরা বলেন, আগে তথ্য যাচাইয়ের জন্য নথি দিয়েছিলেন। তারপরও ফের তাঁদের তুলে আনা হয়।

ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে আসা ভিডিওতে হেনস্থার শিকার বাঙালি ফেরিওয়ালারা বলেন, আমরা ব্যবসার জন্য এখানে এসেছি। আমাদের বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করে সোমবার রাতে পুলিশ নিয়ে আসে। ২ গাড়ি পুলিশ এসেছিল। আমরা আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করব, যাতে আমাদের এখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে বাংলার শ্রমিকদের এভাবে হেনস্থার খবর পাওয়ার পরেই ওড়িশা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের নিরাপদে বাংলায় ফিরিয়ে আনার জন্য ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে পূর্ব মেদিনীপুর এবং মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ।