সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
‘ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী ওমপ্রকাশ রাজভর নির্যাতিতাকে নিয়ে রসিকতা করছেন।’ এভাবেই বড়দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে উন্নাওয়ের নির্যাতিতা ও তাঁর মায়ের হেনস্থার প্রসঙ্গে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী ওমপ্রকাশ রাজভর নির্যাতিতাকে নিয়ে রসিকতা করছেন। আর এসব দেখে নীরব বিজেপি নেতা-নেত্রীরা। এটাই কি বেটি বাঁচাওয়ের বাস্তবতা? যখন একজন ধর্ষক প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ান এবং মন্ত্রী রসিকতা করেন। তখন আমরা আমাদের প্রত্যেক কন্যা, প্রত্যেক মহিলা এবং প্রত্যেক পরিবারকে সুবিচার দিতে ব্যর্থ।’
অন্যদিকে, বছর ঘুরলেই বাংলায় ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিকে যেমন বাংলার ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনীকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই পথে নেমে প্রচারের ঝড় তুলে দিয়েছেন, এবারের ২০২৬ সালের ভোটের প্রস্তুতি শুরু করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের লড়াইয়ের রণকৌশল সাজাতে কোমর বেঁধে নামলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
একদিকে রাজ্য সরকারের ১৫ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরা, আর অন্যদিকে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে বুথস্তরে ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তোলা-এই জোড়া লক্ষ্য নিয়ে দুটি মেগা বৈঠকের ডাক দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ২৮ ডিসেম্বরের ভার্চুয়াল বৈঠকটি হতে চলেছে অভিষেকের রাজনৈতিক জীবনের বৃহত্তম ডিজিটাল সভা, যেখানে প্রায় ৬৫ হাজার বিএলএ-২ সদস্য যুক্ত হবেন। ২৬ ডিসেম্বর প্রথম বৈঠকে ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ কর্মসূচি ঘোষণা করবেন অভিষেক। যেখানে ৫ হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধিকে নির্দেশ দেওয়া হবে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে রাজ্য সরকারের সাফল্যের রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরতে। অভিষেক স্পষ্ট করে দেবেন যে, কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও কীভাবে রাজ্য নিজের তহবিল থেকে মানুষের পরিষেবা নিশ্চিত করেছে।
তবে আসল চমক থাকছে ২৮ ডিসেম্বরের বৈঠকে। এসআইআর শুনানি ঘিরে রাজ্যে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তাকে কেন্দ্র করে বড়সড় আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করবেন অভিষেক। তৃণমূলের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন ২৪ বার নির্দেশিকা বদলেছে, যার ফলে সাধারণ ভোটাররা চরম বিভ্রান্ত। মৃত বা অন্য জায়গায় চলে গিয়েছেন তকমা দিয়ে ভোটার তালিকা থেকে বৈধ নাম বাদ দেওয়ার যে অভিযোগ উঠছে, তার বিরুদ্ধেই বুথস্তরে লড়াই করার টার্গেট দেওয়া হবে কর্মীদের।

তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিজেপি নিজেদের লোক ঢোকানোর জন্য বিএলএ নিয়োগের নিয়ম বদলেছে। ভোটার তালিকায় বানান ভুল বা ২০০২ সালের তথ্যের সঙ্গে অমিলের অজুহাতে সাধারণ মানুষকে হেনস্তা করা হচ্ছে। অভিষেক সাফ জানিয়েছেন, একজন বৈধ ভোটারের নামও যদি বাদ যায়, তবে তৃণমূল রাজপথে নামবে। এই পরিস্থিতিতে ২৮ তারিখের বৈঠক থেকে জেলাওয়াড়ি ‘অবজার্ভার’ নিয়োগের মতো বড় সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে।