শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর প্রদেশে আয়োজিত মহাকুম্ভকে “মৃত্যু কুম্ভ” বলে অভিহিত করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে তার বক্তব্য নিয়ে এখন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি ইউনিটের সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যকে হিন্দু জনগণের প্রতি অপমান বলে অভিহিত করেছেন। মহাকুম্ভ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং এমজি রোডের সংযোগস্থলে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়। পরিষদীয় দল বৃহস্পতিবার গোটা বিধানসভা জুড়ে মিছিল করবে বলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিধানসভা চত্বর থেকে বেরিয়ে সেই মিছিল যাবে রাজভবনে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে অভিযোগ জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। সে জন্য রাজ্যপালের কাছ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ চার বিজেপি বিধায়ককে বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড। আর বিধানসভার অধিবেশনে মহাকুম্ভকে মৃত্যুকুম্ভ বলে উল্লেখ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই দুই ইস্যুতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে জোড়া চিঠি লিখলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
বিধানসভার অধিবেশন থেকে শুভেন্দু-সহ চার বিজেপি বিধায়ককে ৩০ দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। শুভেন্দু ছাড়া বাকি তিন জন হলেন অগ্নিমিত্রা পাল, বিশ্বনাথ কারক এবং বঙ্কিম ঘোষ। দলের চার বিধায়ককে সাসপেন্ড করা নিয়ে রাজ্যপালকে চিঠিতে সুকান্ত লিখেছেন, “অধিবেশনের শালীনতা বজায় রাখা দরকার বলে আমি মনে করি। কিন্তু, এটা উদ্বেগের যে যেসব বিধায়ক বাংলার মানুষের কথা তুলে ধরেন, তাঁদেরই বারবার সাসপেন্ড করেন স্পিকার।”
শুভেন্দুদের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে সুকান্ত লেখেন, “রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য পরামর্শ দিতে আপনাকে অনুরোধ করছি। বিরোধী দলনেতা-সহ বাকিদের উপর থেকে দ্রুত সাসপেনশন প্রত্যাহারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।” রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, শুভেন্দুর সাসপেনশন নিয়ে রাজ্যপালকে আলাদা করে সুকান্তর চিঠি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশনে বক্তব্য রাখার সময় মহাকুম্ভকে মৃত্যুকুম্ভ বলে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর প্রতিবাদ করে রাজ্যপালকে আর একটি চিঠি দিয়েছেন সুকান্ত। এই ধরনের মন্তব্য হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করে বলে লিখেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য বিধানসভার কার্য বিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হোক বলে চিঠিতে অনুরোধ জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। চিঠিতে সুকান্ত অনুরোধ করেন, মুখ্যমন্ত্রীকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলুন রাজ্যপাল।