রাহুল সিংহ মজুমদার। কলকাতা সারাদিন।
কলকাতার সিপি বিনীত গোয়েলকে দেওয়া রাষ্ট্রপতির দুটি পুলিশ পদক কেড়ে নেওয়ার দাবি তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আরজি করে-কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে শুভেন্দু এই পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছেন।
আরজি করে-কাণ্ডে পুলিশি তদন্তের ত্রুটি নিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা শিরদাঁড়া উপহার দিয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী সেই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দুটি চিঠি পাঠিয়েছেন-একটি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে এবং আরেকটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে।
চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট করেছেন যে, বিনীত গোয়েল রাষ্ট্রপতির পদকের যোগ্য নন। তাঁর নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুলিশ আরজি করে-কাণ্ডের তদন্তে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। শুভেন্দু দাবি করেছেন, এ ধরনের পদক দেওয়া একজন দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকর্তাকে সম্মানিত করার সমান।
দু’টি চিঠিতেই শুভেন্দু স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, পুলিশি কৃতিত্বের পদক পাওয়ার ‘যোগ্য’ বিনীত নয়। কারণ বিনীত গোয়েলের নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুলিশ আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ওই দু’টি চিঠিই নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন শুভেন্দু। তাতে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু রাষ্ট্রপতিকে লিখেছেন, “পুলিশের কাজের কৃতিত্বকে সম্মান জানাতেই ভারতের রাষ্ট্রপতি ‘প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল’ এবং ‘পুলিশ মেডেল’ দেওয়ার নিয়ম চালু করেছে। ওই মেডেলের কৃতিত্ব সবসময়েই দলগত। সম্মান জানানোর সময় তাই দলপতি অর্থাৎ পুলিশের পদাধিকারীকে ওই পদক দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে দেওয়া হয় বেশ কিছু সুবিধা এবং আর্থিক পুরস্কারও। এক্ষেত্রেও কলকাতা পুলিশের প্রধান বিনীত ওই পুরস্কার পেয়েছিলেন ২০১৩ এবং ২০২৩ সালে। কিন্তু তিনি তাঁর সম্মানের মর্যাদা রাখতে পারেননি। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে এত দিনে স্পষ্ট, কী ভাবে পুলিশ কমিশনের অপরাধস্থলের তথ্য ও প্রমাণ বিকৃত করে তদন্ত প্রক্রিয়ার ক্ষতি করতে চেয়েছেন। তাই তিনি ওই পদক রাখার যোগ্য নন। তিনি শুধু নিজের নাম নয় কলকাতা পুলিশের ১৬৮ বছরের পুরনো নামও ডুবিয়েছেন।”
এই মর্মেই শুভেন্দু বিনীতকে দেওয়া পদকদু’টি কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মুর্মূ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহকে। যুক্তি হিসাবে শুভেন্দু সংশ্লিষ্ট আইনের উল্লেখ করে লিখেছেন, ”নির্দেশিকায় বলা আছে, ওই পদকের অধিকারী অসততার অভিযোগে দোষী হলে অথবা কাজের ক্ষেত্রে কাপুরুষতার পরিচয় দিলে তার কাছ থেকে ওই পদক প্রত্যাহার করে নেওয়া হতে পারে।”