“বাংলায় কোনও বনধ হবে না। এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিকভাবে অশান্তি তৈরির একটি চেষ্টা।” পাহাড়ে চা শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধকে কেন্দ্র করে কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা স্পষ্টভাবে বলেছেন, বাংলায় বনধের সংস্কৃতি তিনি মানেন না এবং এ ধরনের উদ্যোগকে তিনি সমর্থন করেন না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, এই বনধের বিষয়ে তিনি সরাসরি কোনও হস্তক্ষেপ করতে চান না। চা শ্রমিকদের বোনাস সংক্রান্ত সমস্যাগুলি নিয়ে লেবার কমিশন ইতিমধ্যেই কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, পাহাড়ে বনধের বিষয়টি স্থানীয় সংগঠনগুলির, এবং তারা নিজেই তা দেখছে। মমতার এই মন্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, সরকার বনধের বিরোধী এবং তারা শান্তি বজায় রাখতে সচেষ্ট।
উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রবিবার শিলিগুড়ি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকেলে তিনি সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। পরে আজ দুপুরে বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কোনও বনধকে সমর্থন করি না। ওদের যা সমস্যা তা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চলছে। বৈঠকে সমস্যার সমাধান করা হবে।’
এপ্রসঙ্গে বনধ নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের সমস্যার বিষয়ে আমি কোনও হস্তক্ষেপ করছি না। লেখার কমিশন বিষয়টি দেখছে। কেউ কেউ এটাকে নিয়ে রাজনীতি চেষ্টা করছে। অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে।’ প্রসঙ্গত, ৭ বছর পর ফের পাহাড়ে বনধ হল। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কোনও বনধ হয়নি। বাংলায় কোনও বনধ হয় না। রাজনৈতিকভাবে অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান যখন উত্তরবঙ্গ সফরে ঠিক সেই সময়ে পাহাড়ে বনধ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। চা শ্রমিকদের দাবি, ২০শতাংশ বোনাস দিতে হবে। সেই দাবিতে ১২ ঘণ্টার বনধ পাহাড়ে। বনধ ডেকেছে চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। বনধের সমর্থনে এদিন সকাল থেকেই রাস্তায় নামেন চা শ্রমিকেরা। তাদের সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি চা শ্রমিকেরা রোহিনী টোলগেট সংলগ্ন এলাকায় পিকেটিং-এ শামিল হন।
দেশের জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় বসে সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান তোলেন তারা। সংগঠনের তরফে জানানো হয়, আগামীকাল থেকে প্রতিটি কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হবে।চলবে কর্মবিরতি। এদিকে, বনধের জেরে রোহিনী টোলগেটের দুই প্রান্তে পর্যটকদের গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। তারফলে দুর্ভোগে পড়েন শ্রমিকরা। তাঁদের কথায়, চা বাগান শ্রমিকদের সমস্যা পর্যটকদেরও জানা প্রয়োজন। এদিকে, উত্তরবঙ্গ সফরে শেষে কলকাতায় পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা কলকাতা বিমানবন্দর থেকে নবান্নের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।