সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
১০ দফা দাবিতে জুনিয়র ডাক্তাররা ধর্মতলায় অনশন অবস্থান চালানোর মধ্যে এবারে নবান্ন থেকে রাজ্যের মুখ্য সচিব তাদের কাজে ফেরার বার্তা দিলেন। পাশাপাশি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য জুনিয়র ডাক্তাররা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় যে সমস্ত দাবি জানিয়েছিল সেগুলিও যে বাস্তবায়নের পথে অধিকাংশই এগিয়ে গিয়েছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ।
এদিন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, “সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর ক্ষেত্রে তো সমস্যা হল একসঙ্গে এতগুলি সিসিটিভির সাপ্লাই পাওয়া কঠিন হচ্ছিল। সেই সমস্যা এখন মিটে গিয়েছে। সাপ্লাইগুলির এখন কোনও ঘাটতি নেই। হাসপাতালে সিসি ক্যামেরার নজরদারি হবে, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ। ১০ তারিখের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে ৯০ শতাংশ কাজ। পুজোও রয়েছে এখন। তবে এই সময়ের মধ্যে নিশ্চয়ই সব কাজ করতে সক্ষম হব। এই টার্গেট নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। ডিউটি রুম, রেস্ট রুমেও অপারেশনাল কাজের ৯০ শতাংশ শেষ হয়ে যাবে, সেই লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে। কাজ শুরুর সময়টা ধীর হলেও কাজ যত এগোচ্ছে ততই দ্রুততার সঙ্গে পুরো বিষয়টা হচ্ছে।”
আজ, সোমবার নবান্নে স্বাস্থ্যসচিব, কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে প্রিন্সিপালদের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্যসচিব মুখ্যসচিব। বৈঠক শেষে মুখ্য়সচিব জানান, ‘যে মূলত আমাদের নির্দেশিকায় ছিল, প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো, ডিউটি রুম, রেস্ট রুমের তৈরি বা সংস্কার করা। ওয়াশ কম তৈরি বা সংস্তার করা এবং আলোর ব্যবস্থা করা। এই চারটে নির্দেশ ছিল সুপ্রিম কোর্টের। আগেই আমরা নির্দেশ দিয়েছি। ১১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে’।
কাজ কতটা এগিয়েছে? মুখ্যসচিব জানান, ‘কাজ সব জায়গাতেই চলছে। এখনও পর্যন্ত যেটা খবর পেয়েছি, সিসিটিভি বসানোর কাজ ৪৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়ে গিয়েছে। ডিউটি তৈরি ও সংস্কারের কাজ যেটা ৬৭৮ টা করার কথা ছিল, ৬২ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। ওয়াশ রুমে তৈরি বা সংস্কারের কাজ ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাড়তি আলোর কাজ ৬১ শতাংশ শেষ হয়েছে’।
রাজ্য সরকারি হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজগুলিতে রেফারেল সিস্টেম চালু করার যে দাবি জুনিয়র ডাক্তাররা প্রথম থেকে করে আসছেন সেটিও বাস্তবায়নের পথে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়ে মুখ্য সচিব বলেন, “রেফারেল সিস্টেম নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে প্যানিক অ্যালার্ম চালু হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সবাইকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়া উচিত। কাজে ফিরুন জুনিয়র চিকিৎসকরা।” ইতিমধ্যেই এই ব্যবস্থার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার হাসপাতালগুলিতে পাইলট ট্রেনিং শুরু হয়ে গেছে। জানা গিয়েছে, এই সিস্টেম যদি সফল হয় তাহলে চলতি বছর নভেম্বর থেকেই হবে ‘সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম’।
অন্যদিকে, বীরভূমের বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবার পিছু আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, মৃতদের পরিবার পিছু ৩২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে। এর পাশাপাশি পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। সোমবার বিকেলে নবান্ন থেকে মুখ্যসচিব মৃতদের পরিবার পিছু আর্থিক সাহায্য ও মৃতদের পরিবারের একজন সদস্যের চাকরির ঘোষণা করলেন।