সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আরজি করের পর এসএসকেএম হাসপাতাল! ফের বিনা চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কোন্নগরের পর এবার রিষড়া। হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা রাজীব দেবের মৃত্যুর ঘটনায় ফের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ উঠল।
প্রাণ চলে গেল এক তরতাজা যুবকের। পরিবারের অভিযোগ, আরজি কর কাণ্ডের জেরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদেরও কর্মবিরতি চলছে। তার আঁচ পড়ছে চিকিৎসা পরিষেবায়। রাজীবের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সময়ে ক্যাথিডার না পাল্টানোর কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মৃতের বোন জানান, আমার ভাইকে কেউ দেখতে আসেনি। কোনও ডাক্তার আসেননি। এটা কেন হবে? আমি জাস্টিস চাইছি। এভাবে কোনও বোনকে যেন ভাই হারা না হতে হয়।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের ওয়ার্ডে ডাক্তার না আসার কারণে, সঠিক সময়ে রাজীবের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না হওয়াতেই গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজীবের মৃত্যু হয়েছে। ১০ বছর আগে মায়ের থেকে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল রাজীবের শরীরে। সম্প্রতি রাজীবকে কিডনির সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। জানা গিয়েছে, গত বৃস্পতিবার কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার জেরে রিষড়া পদ্মপুকুর বাগপাড়া এলাকার রাজীবকে এসএসকেএম-এর নেফ্রোলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল। রাজীবের মা সীমা দেবের একটি কিডনি ছেলের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু গত ১৫ অগাস্ট থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে হাসপাতালের ভিতরে পরিষেবা দানকারী চিকিৎসকদের সংখ্যা অপ্রতুল। সেই কারণে চিকিৎসা পরিষেবাও ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে।
পরিবারের অভিযোগ, আন্দোলনের নাম করে জুনিয়র চিকিৎসকরা অবস্থান মঞ্চে বসে চা, কফি খাচ্ছেন। আর রাজীব যন্ত্রণায় ছটফট করছে হাসপাতালের বেডে শুয়ে। কোনও চিকিৎসক রাজীবের ক্যাথিডার লাগাতে আসেনি। দু’দিন ধরে ইউরিন না হওয়ার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
রাজীবের মামা রূপক চৌধুরীর প্রশ্ন ”আজকে জুনিয়র ডাক্তাররা যেভাবে রোগী না দেখে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, এর জন্য কত মায়ের কোল খালি হয়ে যাচ্ছে তাঁরা জানেন? যে ডাক্তার দিদির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে সে ব্যাপারে আমরা সমব্যথী। তার জন্যও আমরা রাত জেগেছি কিন্তু আজকে আমার বাড়ি ছেলেটাই চলে গেল। সেখানে কিন্তু কোন চিকিৎসাই পেল না।”