সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
‘কেউ যদি রাত বারোটায় বেরিয়ে যায়। পুলিস তো জানতে পারে না কে কখন বাইরে বের হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে ছেলেমেয়েরা পড়তে আসে। তাদের অনুরোধ, রাতে না বের হওয়াই ভালো। আমি প্রাথমিক যে রিপোর্ট পেয়েছি, পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। কেউ রেহাই পাবে না। যেই দোষী হোক না কেন, কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।’ দুর্গাপুরে ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণের ঘটনায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা ঘোষণা মমতার। রবিবার দুপুরে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্তম্ভিত করে দেওয়ার মতো ঘটনা। ওই মেয়েটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ছিল। বেসরকারি কলেজে….কার দায়িত্ব। রাত ১২.৩০-এ বেরোল কী করে? আমি যতদূর জানি, জঙ্গলের মধ্যে ঘটেছে। ১২.৩০-এ কী হয়েছে জানি না। তদন্ত চলছে। আমি হতবাক। বেসরকারি মেডিক্যালগুলিকে সতর্ক হতে হবে, পড়ুয়াদের খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে, রাতের বেলায় বাইরে বেরোতে দেওয়া উচিত নয়। নিজেদের রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে জঙ্গল এলাকায়। আমি প্রাথমিক যে রিপোর্ট পেয়েছি, পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। কেউ রেহাই পাবে না। যেই দোষী হোক না কেন, কড়া শাস্তি দেওয়া হবে।’
দুর্গাপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তদন্ত সঠিক পথে চলছে বলে দাবি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তিন জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে মেয়েটির বয়ানের ভিত্তিতেই। আমরা কড়া পদক্ষেপ করব। জিরো টলারেন্ট নীতি মেনে চলি বাংলায়। বিভিন্ন রাজ্যের ছেলেমেয়ে এখানে পড়তে আসেন। তাদের আমি অনুরোধ করব, রাত্রি বেলা না বেরোতে। পুলিশ তো জানতে পারে না, কে কখন রাত্রিবেলা বেরিয়ে যাচ্ছে! বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজেরও একটা দায়িত্ব আছে, পড়ুয়াদের দেখভাল করা। পুলিশ তো আর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বসে থাকবে না! কেউ যদি রাত ১২.৩০টায় বেরিয়ে কোথাও যায়…ঘটনাটা নিন্দনীয়, ঘটনাটিকে সমর্থন করছি না। যে যেখানে যেতে পারে, তার অধিকার। কিন্তু হস্টেলে থাকে যারা, একটা সিস্টেম আছে। ও ফার্স্ট ইয়ারের পড়ুয়া। এটা প্রাইভেট কলেজ। ওদের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো উচিত। আমি ডিটেলস খবর নিয়েছি। পুলিশকে বলেছি কড়া পদক্ষেপ করতে। কেউ রেহাই পাবে না।’

বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বাংলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে ঘটেছে দাবি তোলার পাশাপাশি মহিলাদের নিরাপত্তা নেই বলে যে অভিযোগ উঠেছে তার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুলিশকে জিজ্ঞেস করুন, আমাকে নয়। একটি বেসরকারি কলেজ। কেউই সমর্থন করছে না। তিন সপ্তাহ আগে ওড়িশায় তিনটি মেয়েকে সমুদ্র সৈকতে ধর্ষণ করা হয়। ওড়িশা সরকার কী করেছে? বাংলায় মহিলাদের সঙ্গে কিছু হলে, আমরা হালকা ভাবে নিই না। গুরুতর ঘটনা। অনেক ঘটনা ঘটছে। রোজ ঘটছে। সেখানে মাথাব্যথা নেই। ধর্ষিতাকে আদালতে পৌঁছনোর আগে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। সাংবাদিকদের ধরে, নগ্ন করে জেলে পুরে রাখে। এমন অনেক ঘটনা ঘটে। আমরা কোনও ঘটনাকেই সমর্থন করি না। অন্য রাজ্যের ঘটনাও সমান নিন্দনীয়। মণিপুর, উত্তরপ্রদেশ, বিহারে, ওড়িশায় বহু ঘটনা ঘটেছে। সেখানকার সরকারেরও কড়া পদক্ষেপ করা উচিত। আমাদের রাজ্যে এক-দু’মাসে চার্জশিট দেওয়া হয়। নিম্ন আদালত মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দিয়েছে।’