সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“সবাই বিচার চাই, বিচার চাই বলছে। কিন্তু বিচার কীভাবে আনবে, তা বলছে না।” এভাবেই কালীপুজোর মধ্যে নিজের মেয়ের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে যাবতীয় আন্দোলনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা।
দীপাবলিতেও চারিদিকে আঁধারই দেখছেন তাঁরা। আশার আলে যেন ক্ষীণ হয়ে আসছে প্রতি নিয়ত। স্মৃতি খাচ্ছে কুরে কুরে আর ডুকরে উঠছেন সন্তান হারানো বাবা – মা। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন। লিখেছিলেন মর্মস্পর্শী চিঠি। এখনও হয়নি সাক্ষাৎ। কার্যত হতাশ নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা। বলছেন, অমিত শাহ হয়ত সময় দিতে পারেননি, সারা দেশের দায়িত্ব রয়েছে। তবে জানালেন, বিজেপির লোকেরা যোগাযোগ রাখছেন। তবে বলছেন, ‘অমিত শাহের সাক্ষাৎ পেলে ভাল লাগত, মনের জোর বাড়ত’।
তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুনের পর থেকে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। তাঁদের আন্দোলনের সঙ্গে আগাগোড়াই থেকেছেন নির্যাতিতার বাবা -মা। অনশন মঞ্চে গিয়ে অনশনও ভাঙিয়েছেন আন্দোলনকারীদের। তারপর হঠাৎ আত্মপ্রকাশ করে নতুন প্ল্যাটফর্ম। জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছে নিহতের পরিবার। নির্যাতিতার মায়ের মনে গভীর হয়েছে আশঙ্কা। তাঁর সন্দেহ, ‘থ্রেট কালচারে অভিযুক্তরাই এখন বিচারের দাবিতে সংগঠন গড়েছে। ওরা বলছে বিচার চাই, হয়তো ওদের মধ্যে অপরাধী লুকিয়ে আছে’। মনে করছেন সন্তান হারানো মা।
নিহতের বাবা বলেন, ‘ওদের কী উদ্দেশ্য জানি না, সবাই বিচার চাই, বিচার চাই বলছে। কিন্তু বিচার কীভাবে আনবে, তা বলছে না। এতে আমাদের মনে চাপ বাড়ছে’ । আর জি কর কাণ্ডে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের আদলে আচমকা তৈরি হয়েছে আরেকটি সংগঠন।
সপ্তাহ খানেক আগেই সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে সংগঠনটি। এঁরা প্রায় সকলেই সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ করেছেন গত আড়াই মাস ধরে আন্দোলনরত জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের চিকিৎসকরা। এবার এই সদ্য গজিয়ে ওঠা প্ল্যাটফর্মের সদস্যদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুললেন নির্যাতিতার মা-বাবা। এবার তাঁরাও আন্দোলনে নামবেন, বললেন চিকিৎসকের বাবা – মা।