সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
১০ বছরের প্রধানমন্ত্রী। দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় সংস্কারের কারিগর। মিতভাষী, অজাতশত্রু রাজনীতিবিদ। দেশের অন্যতম সেরা ব্যক্তিত্বের প্রয়াণের পরও আশ্চর্যজনকভাবে নীরব দেশের ক্রীড়ামহল এবং বিনোদন জগত। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জন্য ন্যূনতম শোকবার্তাটুকুও দেননি খেলা এবং বিনোদুনিয়ার অধিকাংশ প্রথম সারির তারকা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্যে নোংরা রাজনীতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। একসারিতে না দাঁড়ালেও দেশের বিশিষ্টদের সমালোচনা করে ঘুরিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করল তৃণমূলও। মনমোহনের মৃত্যুতে কেন্দ্রের চাপে সমাজের ক্রীড়া ও চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্টরা মৌনব্রত নিয়েছিলেন বলে দাবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এদিন এক্স পোস্টে লেখেন, মনমোহন সিংয়ের প্রয়াণে ক্রীড়া ও চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্টদের পুরোদমে চুপ থাকা খুবই দুঃখের ব্যাপার।
অভিষেকের মতে, এনাদের কেউ কেউ আবার রোল মডেল হিসেবে জনপ্রিয়। কিন্ত মনমোহন সিংকে নিয়ে নীরব মনোভাবই তাদের দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে। সরকারের বিরাগভাজন না হতেই জাতীয় ইস্যুতে চুপ থাকা এখনের তথাকথিত সমাজের আইকনদের ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে বলে কটাক্ষ অভিষেকের। তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “নিজেদের রোল মডেল বাছুন সাবধানে। এই রোলমডেলদের কাছে এবার দায়িত্ববোধ আশা করা উচিত আমাদের।”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার সোশাল মিডিয়ায় ক্রীড়া এবং বিনোদন জগতের প্রথম সারির তারকাদের নিশানা করে বললেন, “ভারত দেশের সেরা ব্যক্তিত্বদের মধ্যে একজনকে হারাল। যার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সংস্কারমুলক পদক্ষেপ ভারতের অর্থনীতি বদলে দিয়েছে। ভারতকে উন্নয়নের দিশা দেখাতে মনমোহন সিংয়ের ভূমিকা অদ্বিতীয়। তাঁর প্রয়াণে মতাদর্শ নির্বিশেষে ডান-বাম সবপক্ষ থেকেই শোকবার্তা এসেছে। কিন্তু এটা একই সঙ্গে আশ্চর্য এবং দুঃখজনক যে গোটা ক্রীড়া এবং বিনোদন দুনিয়ে মনমোহনের প্রয়াণে নীরব।”
অভিষেকের বক্তব্য, “যাঁদের আমরা নিজেদের রোল মডেল বলে মনে করি, মনমোহনের প্রয়াণের পর নীরবতা তাঁদের দায়িত্ববোধ, নৈতিকতা নিয়ে অস্বস্তিকর প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করে।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, বিনোদন জগতের এই নীরবতা সম্ভবত সরকারের প্রতি ভীতির ফলশ্রুতি। আসলে জাতীয় কোনও ইস্যুতে নীরব থাকাটা এই তথাকথিত রোল মডেলদের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সেই সঙ্গে অভিষেক মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই তথাকথিত রোল মডেলরা সিএএ-এনআরসি, কৃষক বিক্ষোভের মতো ইসুতেও নীরবই থেকেছেন। মণিপুরের মতো ইস্যুতেও মুখ খোলেননি। এভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাঁদের নীরবতা বোঝায় সাধারণ মানুষের জীবন-সংগ্রামে এঁরা কতটা নির্লিপ্ত। অথচ তাঁরা সব সম্মান এবং অর্থ সাধারণ মানুষের ভালোবাসার বলেই অর্জন করেছেন।”