সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
“স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতি হিসেবে অরাজনৈতিক ভুল করেছিলাম কংগ্রেস ছেড়ে। আমি ক্ষমা চাইছি। কংগ্রেস ছেড়ে যাওয়া উচিত হয়নি আমার।” তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে জানালেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
বুধবার কংগ্রেসে ফিরলেন, দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। বুধবার সকালে কলকাতায় কংগ্রেসের দফতরে আবারও হাতশিবিরে যোগদান করেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নেন তিনি।
বুধবার প্রদেশ কংগ্রেসের কলকাতার দফতরেই দলে ফের ওয়াপসি করেন অভিজিৎ। সেখানে শুভঙ্কর বলেন, “খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। আপনারা জানেন, আমাদের দল থেকে বিধায়ক, সাংসদ, প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি আজ আমাদের দলে নতুন ভাবে যুক্ত হচ্ছেন। অভিজিতের আর একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র। তিনি আমাদের দলে এসে, আমাদের নীতি-আদর্শের সঙ্গে যুক্ত ছিলেনই, এখান থেকেই স্কুলিং, যাত্রা শুরু। কিছু দিন ছিলেন না আমাদের সঙ্গে। অন্য দলের সঙ্গে যুক্ত হন। সেখান থেকে আজ দলের পতাকা গ্রহণ করছেন তিনি।”
তৃণমূলে রাজনৈতিক ভাবে খুব একটা সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি তাঁকে। বরং গতবছর থেকেই শোনা যাচ্ছিল, তিনি তৃণমূলে ফিরতে পারেন বলে। একটি সাক্ষাৎকারে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এখন বললে এখনই দলে যোগ দিতে তৈরি আমি। কংগ্রেস আমাকে গ্রহণ করলে তাদের হয়ে কাজ করতে চাই।” ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন যখন শিয়রে, নতুন রাজনৈতিক দক্ষতা ঝালিয়ে নিতেই কি কংগ্রেসে তাঁর প্রত্যাবর্তন, উঠছে প্রশ্ন।
কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের নির্দেশেই অভিজিৎ ফের দলে ফিরলেন বলে জানান শুভঙ্কর। রাহুল গান্ধীর আদর্শকে পাথেয় করে আগামীতে অভিজিৎ চলবেন বলে জানান শুভঙ্কর। বাংলার মানুষের জন্য লড়াই করতে এটা কংগ্রেসের বড় পদক্ষেপ বলে জানান তিনি।

দলে ফিরে অভিজিৎ বলেন, “অনেক দিন ধরেই খাড়গে সাহেবের সঙ্গে কথা চলছিল। বিভিন্ন কারমে দেরি হল। আজ দ্বিতীয় জন্মদিন আমার। ২০১১ সালের ১১ মার্চ সম্ভবত এই দিনেই যোগ দিয়েছিলাম। কিছুদিনের জন্য ছিলাম না যদিও। যাঁরা চাকরি করেন বুঝবে। সাবাটিক্যাল লিভে ছিলাম ধরে নিন। আমি খুবই খুশি এবং কৃতজ্ঞ যে আমাকে পুনরায় যোগদানের সুযোগ দিয়েছেন। কংগ্রেস ছেড়ে যাওয়া উচিত হয়নি আমার। আজ যে তিনজনের জন্য কংগ্রেসে ফেরা সম্ভব হল, তাঁরা হলেন, রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। আর একটা কথা বলতে চাই, কংগ্রেসের কোনও বিকল্প নেই ভারতে। প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যন্ত এলাকায় একটা-দু’টো হলেও কংগ্রেস সমর্থক পাবেন। যাঁরা কংগ্রেসে ছিলেন, বা ছেড়ে চলে গিয়েছেন, তাঁদের কাছে পৌঁছনোই আমার কাজ হবে। জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে একসুতোয় বেঁধে রাখার কাজ কংগ্রেস ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না। দিল্লি নির্বাচনেও সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস ছাড়া এগোতে পারবে না কেউ।”