সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
আরও একটি ভয়াবহ ঘটনা দেখলো পশ্চিমবঙ্গবাসী। জাতীয় সড়কের উপরে ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। মৃত্যু হল চন্দননগরের ২৭ বছরের এক তরুণী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের।
চন্দননগরের বাসিন্দা সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়, পেশায় একজন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্মী।
রবিবার মাঝরাতে নিজের সহকর্মীদের সঙ্গে একটি গাড়ি করে চন্দননগর থেকে গয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সুতন্দ্রা। গাড়িতে সুতন্দ্রা ছাড়াও ছিলেন আরও চার জন।
সুতন্দ্রার গাড়ি চালকের দাবি, পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদ থানা এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে তেল নেওয়ার জন্য দাঁড়ায় তাদের গাড়ি। পেট্রোল পাম্প থেকে তেল ভরার পরেই তাঁদের গাড়িকে ধাওয়া করে পাঁচ যুবকের একটি গাড়ি। গাড়ির চালকের জানান, সেই গাড়ির প্রায় প্রত্যেকেই ছিলেন মত্ত অবস্থায়। তারা প্রত্যেকে সুতন্দ্রার গাড়ির উদ্দেশ্যে কটুক্তি করতে থাকে, এরপরই সুতন্দ্রাদের গাড়িটিকে ধাওয়া করতে শুরু করে মত্ত যুবকদের গাড়িটি। তাদেরকে এড়াতে গাড়ির গতি বাড়ান চালক। কিন্তু, মত্ত যুবকদের ওই গাড়িও জোর গতিতে সুতন্দ্রাদের গাড়ি ওভারটেক করে সামনে পথ আটকে দাঁড়ায়। তখনই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উলতে যায় সুতন্দ্রাদের গাড়িটি। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় হুগলির চন্দননগরের বাসিন্দা ওই তরুণীর। গাড়িতে থাকা অন্যান্যরা চোট পেলেও, সেই চোট গুরুতর নয়।

প্রতিবেশীরা জানান, বাড়িতে সুতন্দ্রার মৃত্যুর খবর আসামাত্রই চন্দননগর থানায় গিয়েছিলেন মৃতার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়। তার পর সেখান থেকেই আসানসোলের উদ্দেশে রওনা দেন।
সুতন্দ্রা চন্দননগরের নাড়ুয়া রায় পাড়ায় বাসিন্দা। বাবা সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় রেলের ঠিকাদার ছিলেন। বছরখানেক আগে তাঁরও মৃত্যু হয়। এক প্রতিবেশী জানান, বাবার ক্যানসারে মৃত্যুর পর সুতন্দ্রাই সংসারের হাল ধরেছিলেন। বাড়িতে তাঁর মা এবং ঠাকুমা-দিদিমা রয়েছেন। স্বামীর মৃত্যুর পর মেয়ের মুখের দিকে চেয়েই বাঁচছিলেন তনুশ্রী। এ বার মেয়ের মৃত্যুতে তিনি একেবারে ভেঙে পড়েছেন।

ওই প্রতিবেশীর কথায়, ”মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল ওর মায়ের। মেয়েটাও মরে গেল। থানায় দেখা হয়েছিল সুতন্দ্রার মায়ের সঙ্গে। উনি কথা বলার অবস্থাতেও ছিলেন না। ভাঙা গলায় বললেন, ‘আমি সুইসাইড করতে চাই। এ বার আর বাঁচতে পারব না।’ মেয়েটা এ ভাবে চলে যাবে, ভাবতে পারছি না। খুব ভাল মেয়ে ছিল সুতন্দ্রা। আমরা চাই, ইভটিজ়ারদের শাস্তি হোক।”