সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন-এর নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কোন হস্তক্ষেপ করবে না কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁরা এই মুহূর্তে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবেন না এবং মামলার দ্রুত শুনানিতেও রাজি হননি।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। এদিন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরিদৌস শামিম আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, ”২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তিতে অনেক বিধিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির অনুরূপ নয়। নতুন এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়ম বদল হলে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ আরও কমে যাবে।”
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরপরই জারি করা এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত নিয়োগ বিধির বিরোধিতা করে হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল। এই মামলাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য আজ জানান, হাইকোর্ট আপাতত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। বিচারপতি আরও বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে চলতে দেওয়া হবে। যদি এর মধ্যে নতুন করে কোনো অসুবিধা বা সমস্যা তৈরি হয়, তবেই আদালত বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। অন্যথায়, এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হবে।
আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু এসএসসির নতুন বিজ্ঞপ্তিতে আগের বিধির তুলনায় অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির অনুরূপ নয়। আইনজীবীর দাবি, এই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ আরও কমে যাবে।
গত মাসের শেষেই এসএসসি ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের জন্য নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এই বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার বিধিতেও বেশ কিছু বদল আনা হয়। মামলাকারীরা মূলত দাবি করছেন যে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিধি ২০১৬ সালের মতোই হওয়া উচিত। তাদের মতে, ২০২৫ সালের নিরিখে প্রায় ৯ বছর আগের নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিধি নির্ধারণ করা যুক্তিযুক্ত নয়।
প্রসঙ্গত, এসএসসির পক্ষ থেকে ৩০ মে যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে লিখিত পরীক্ষায় নম্বর থাকবে ৬০, ২০১৬ যা ছিল ৫৫। শিক্ষাগত যোগ্যতায় এবার থাকবে ১০ নম্বর, ২০১৬ সালে ছিল ৩৫। আর ইন্টারভিউয়ে থাকবে ১০ নম্বর। মামলাকারীরা সেই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন যে, আগে ৫৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হলেও এখন নতুন বিজ্ঞপ্তিতে ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও, চাকরিপ্রার্থীদের যোগ্যতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর মতো নতুন মাপকাঠি সংযোজন করা হয়েছে, যার ওপর নির্দিষ্ট নম্বর বরাদ্দ থাকবে। ফলে, যারা আগে অপেক্ষমাণ তালিকায় (ওয়েটিং লিস্ট) ছিলেন, তাদের যোগ্যতা মূল্যায়নে পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সমস্ত কারণ দেখিয়ে মামলাকারীরা নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানালেও, আদালত এখনই তাতে সাড়া দেয়নি।