সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
“কোনও না কোনও মঞ্চে তো আমি থাকবই ২১ তারিখ। দেখা যাক ২১ তারিখ আসুক। ২১ তারিখের পর আর প্রশ্ন থাকবে না, সমাধান হয়ে যাবে সব।” দিলীপ ঘোষের মুখে এবার শোনা গেল ২১ জুলাইয়ে চমকের কথা। দীঘায় গিয়ে জগন্নাথ দর্শনের পর থেকেই দলের অন্দরে কমেছে দিলীপ ঘোষের কদর। ডাক পাননি নব নির্বাচিত রাজ্য সভাপতি বরণের অনুষ্ঠানে। গত এপ্রিল মাসে অক্ষয় তৃতীয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দীঘায় পুরীর আদলে তৈরি জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গেরুয়া শিবিরের অন্দরের অলিখিত ভাবে যেন ব্রাত্য হয়ে রয়েছেন তিনি।
গত কয়েক মাস ধরেই বিজেপির কোনও জনসভা বা অনুষ্ঠানে আর আগের মতোন করে দেখা যায় না প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষকে। তাহলে কী দলে কমছে তাঁর জনপ্রিয়তা? যদিও এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ বঙ্গ বিজেপির এই দাপুটে নেতা।
সোমবার সকালে ইকো পার্কে সাংবাদিকদের মুখোমুখি বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। নানারকম জল্পনা তৈরিও করলেন। কিছু জিনিস উস্কে দিলেন, কোথাও বজায় রাখলেন নিজের চিরাচরিত স্পষ্ট বার্তা। দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজনীতিতে তো জল্পনাই চলে। মানুষ কী জানতে চায় সেটাই আসল। অনেকের রাজনীতি জল্পনা দিয়েই চলে। আমাদের জলও নেই, আর পোনাও নেই। আমার রাজনীতি আছে।”
ফের দলবদলের প্রসঙ্গ আসবেই এরপর, বুঝে দিলীপ মৃদুহাস্যে জানান, “পদ্ম থেকে জোড়া ফুলে তো যাতায়াত লেগেই থাকে। সেই তত্ত্ব থেকেই অনেকে বলে। এই প্রশ্ন তো আপাতত রোজ জিজ্ঞাসা করবেন। আপনাদের আর কোনও প্রশ্ন থাকলে বলুন।” কোচবিহারের তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহর ৮ জেলা থেকে বিজেপিকে সরানোর বক্তব্যের কথা উঠলে দিলীপ বলেন, “আপনে ঘরমে কুত্তা ভি শের হোতা হ্যায়। কোচবিহারের বাইরে উদয়ন গুহকে কে চেনে? উল্টো যদি হয়? কলকাতাতেই যদি উল্টে যায়, কী করতে পারবেন?”
তিনি আরও বলেন, “ক্ষমতা চিরদিন থাকে না। যারা ক্ষমতার দাস, তাঁদের লোকে ভুলে যায়। এরকম চোখ বোলান পশ্চিমবঙ্গে, এরকম শের আগেও ছিল, এখন তাঁরা কোথায়? বেঁচে আছে, তবে বেঁচে আছে কিনা কেউ জিজ্ঞাসা করে না।”
প্রশ্ন ধেয়ে আসে দিলীপের দিকে যে, ঠাকরে মডেল অনুসরণ করে বাম-তৃণমূল জোট এসে বিজেপিকে নিশ্চিহ্ন করবে। এ বিষয়ে কী ভাবছেন তিনি? সোজা জবাবে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিলীপের উত্তর, “ও তো রোজ নতুন নতুন জল্পনা চলতেই থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার চর্চা দিয়ে রাজনীতি চলতে পারে না।”
সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল যুবনেত্রী রাজন্যা হঠাৎ সরব হয়েছেন কসবা কাণ্ডের পর। হঠাৎ নেতা বা নেত্রী হলে নাকি এমনটা হয়। তাঁর কথায়, “তৃণমূল তো মেলার মতো। যখন ইচ্ছা আসছে, যাচ্ছে, যা ইচ্ছা করছে। এদের সামলাতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যতিব্যস্ত। প্রশাসন কোথায়, কেউ জানে না।” মুরলীধর সেন লেনের কথা আসলে তিনি জানান, তার সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে আছে তাঁর। তবে নতুন রাজ্য সভাপতিই ঠিক করবেন কোথায় বসবেন।