চন্দননগরের কানাইলাল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচিত বামপন্থী কর্মী শুভ্রদীপ হালদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগে। তিনি সম্প্রতি আর.জি. কর মেডিক্যাল কলেজে চালিত “রাত দখল” কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই ঘটনা চন্দননগর ও রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
🧑🏫 অভিযুক্ত শিক্ষক ও তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকা
শুভ্রদীপ হালদার একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক হিসেবে পরিচিত হলেও, রাজনৈতিক মহলে তিনি পরিচিত বাম আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী হিসেবে। আর.জি. কর কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনে তিনি যুক্ত ছিলেন এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। তবে সেই নেতা এমন নিন্দনীয় অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
⚖️ অভিযোগ ও তদন্ত
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ, স্কুলের ভেতরেই তিনি অশোভন আচরণ করেছিলেন এবং শারীরিকভাবে স্পর্শ করেছিলেন ওই ছাত্রীকে। অভিভাবকেরা প্রথমে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালে তা পুলিশের কাছে যায় এবং দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে গ্রেপ্তারির নির্দেশ আসে।
👮♀️ পুলিশি পদক্ষেপ
চন্দননগর থানার পুলিশ ইতিমধ্যে শুভ্রদীপ হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়েছে এবং বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো আইনে (POCSO Act) মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
🧒 অভিভাবকদের ক্ষোভ ও নিরাপত্তার প্রশ্ন
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, স্কুল হল শিক্ষার পবিত্র স্থান। সেই স্থানে যদি প্রধান শিক্ষকই অপরাধে যুক্ত থাকেন, তাহলে নিরাপত্তা কোথায়? স্কুলের পরিবেশ, মনোবিজ্ঞান এবং শিশুদের মানসিক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
🟥 রাজনীতি বনাম অপরাধ
বামপন্থী সংগঠনগুলো এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে এই ঘটনা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত নাকি সত্যিকারের অপরাধ, তা নিয়ে নানা মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকলে রাজনৈতিক পরিচয় কোনো ঢাল হতে পারে না।
শুভ্রদীপ হালদার-এর গ্রেপ্তার শুধু একটি অপরাধমূলক ঘটনার দৃষ্টান্ত নয়, বরং এটি স্কুল-শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে। রাজনীতি বা আন্দোলন নয়, এখন আলোচনার কেন্দ্রে একজন শিক্ষকের অমানবিক আচরণ।