সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
শেষপর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্ট থেকে উলুবেড়িয়ায় জনসভার অনুমতি পেলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার, ২১ অক্টোবর তরুণ সংঘ ক্লাবের মাঠেই হবে জনসভা। অনুমতি দিলেন বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েক। জনসভার অনুমতি দিলেও একাধিক শর্ত বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট।
উলুবেড়িয়ায় সভার জন্য পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার শুনানি চলাকালীন শুভেন্দুর আইনজীবী বলেন, নেতাজি ক্লাব প্রথমে জনসভা করার অনুমতি দিয়েছিল। পরে চাপের মুখে তা প্রত্যাহার করে। এরপর তরুণ সংঘের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মাঠটি ক্লাবের নয়। পিডব্লিউডি-র মাঠ। অথচ এর আগে রাজাপুর থানার অধীনে ওই মাঠে সভার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।
রাজ্যের তরফে আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যে কারও সভা করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু ওই ক্লাবের কোনও অধিকার নেই অনুমতি দেওয়ার। ন্যাশনাল হাইওয়ে ১৬ রয়েছে ক্লাবের পাশেই। মামলাকারীর নিরাপত্তা এবং ট্র্যাফিকের অসুবিধা হবে।
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সভার জন্য অনুমতি দিলেও একাধিক শর্ত মানতে হবে বলে জানায় হাইকোর্ট। বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েক জানিয়েছেন, আগামী ২১ অক্টোবর দুপুর ২টা থেকে ৬টার মধ্যে সভা করতে পারবেন শুভেন্দু অধিকারী।
তবে জনসভার জন্য যেন পার্কিং ও রাস্তায় কোনও প্রভাব না পড়ে। জনসভায় দু’হাজার লোকের বেশি জমায়েত হওয়া চলবে না।
অন্যদিকে, শিল্পকে অস্ত্র করে সিঙ্গুরে পথে বিজেপি। রতন টাটার ছবি নিয়ে শোক মিছিল করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখান থেকেই রাজ্যের শিল্প নীতির তুলোধনা করেন। চাঁচাছোলা ভাষায় কটাক্ষবাণ শানিয়ে তিনি বলেন, “ক্ষমতায় এলে আমরা হাতে-পায়ে ধরে টাটা কোম্পানিকে ফেরাব। আজ বাঙালি হয়ে ওনার কাছে ক্ষমা চাইছি। ক্ষমা চাইতে এসেছি।”
প্রসঙ্গত, এদিন সিঙ্গুরের গোপালনগর সাহানাপাড়া থেকে টাটা কারখানার এক নম্বর গেটের কাছে পর্যন্ত মিছিল করেন শুভেন্দু অধিকারী। ৬০০ মিটারের ওই পদযাত্রায় শুভেন্দুর সঙ্গে পা মেলান জেলার শীর্ষস্তরের অনেক পদ্ম নেতাও। তারপর করেন সভা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকলের হাতে দেখা গেল রতন টাটার ছবি। বিজেপির দাবি সিঙ্গুরে টাটা কারখানা তৈরি করতে আসার পিছনে প্রকৃত নায়ক ছিলেন রতন টাটা। সে কারণেই টাটাদের কারখানার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় মঞ্চ বেঁধে শোক সভার আয়োজন।
প্রসঙ্গত, সিঙ্গুর থেকে টাটারা চলে যাওয়ার পর রাজ্যে যে আর তেমন বড়সড় মাপের কোনও শিল্প আসেনি, সেই কথাও বার বার মনে করায় বিরোধীরা। যদিও টাটা বিদায়ের দায় নিতে নারাজ মমতা। সাম্প্রতিককালেই বলেছিলেন, ‘টাটাকে আমি তাড়াইনি, সিপিএম তাড়িয়েছে।’ যদিও শুভেন্দু এদিন বলেন, “এই জমির সর্বনাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন বুদ্ধবাবু মেরে তুলে দিলে এই সর্বনাশ হত না।” এদিন আবার তৃণমূলের পাশাপাশি সিপিএমের বিরুদ্ধেও এদিন সুর চড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, “আসলে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট বুদ্ধবাবুর কথায় চলত না। জ্যোতি বাবুর কথা চলত। সিপিআইএম নির্মূল করতে হবে। আমরাই বিকল্প। আমরাই বেকারত্ব ঘুচিয়ে শিল্পায়নের জোয়ার আনব।”