সুমন তরফদার। কলকাতা সারাদিন।
“স্পিকাররা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। ইডি, সিবিআই দিয়ে স্পিকারদের বাড়িতে রেড করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” এভাবেই কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এজেন্সি রাজনীতির অভিযোগ করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফের ইডি-সিবিআইয়ের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে সরব হয়েছেন বিমানবাবু। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যের স্পিকারদের নিয়ে আয়োজিত সম্মেলনেও এ ব্যাপারে তিনি সরব হয়েছিলেন। বিমান বলেন, “স্পিকাররা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। ইডি, সিবিআই দিয়ে স্পিকারদের বাড়িতে রেড করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু স্পিকার নয়, বিধায়ক, মন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও তো আমাদের রাজ্যে এরকম ঘটনা ঘটেছে। স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সদস্য বিধানসভায় মিটিংয়ে যোগ দিতে এসেও না পেরে বাড়িতে দৌড়ে গিয়েছিল।” স্পিকার আরও বলেন, “তদন্তের নামে এভাবে যখন তখন বিধায়কদের ডেকে পাঠিয়ে বিব্রত করা ঠিক নয়। আমার বক্তব্য, কাউকে সিবিআই তদন্তের জন্য ডেকে পাঠাতেই পারে। কিন্তু আগাম জানালে অসুবিধা কোথায়? সেক্ষেত্রে বিধানসভার কাজে সমস্যা হয় না।”
আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বিধানসভার অধিবেশন। মঙ্গলবার বিধানসভায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২৫ তারিখ বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন হবে। এবারের অধিবেশনে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। ১০-১১ দিন অধিবেশন চলবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজনেস অ্যাডভাইজ়রি কমিটিতে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে।
পুজোর আগে এক দিনের অধিবেশন ডেকে অপরাজিতা বিল পাশ করিয়েছে রাজ্য সরকার। এই বিলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অপরাজিতা বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে রাজ্যপাল আমাদের জানিয়েছিলেন। কিন্তু নিয়ম হল বিল পাস হয় বিধানসভায়। সেটা আমরা পাঠাই রাজ্যপালের কাছে, কিন্তু তার কী ভবিষ্যৎ আমরা জানতে পারি না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটা হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।”
নারী নির্যাতন নিয়েও এদিন সরব হন বিমান। স্পিকার বলেন, নারী নির্যাতন একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। দেশ জুড়েই এই ধরনের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। সকলে একযোগে প্রতিবাদে সরব হওয়া উচিত।
রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, নারী নির্যাতন গোটা দেশ জুড়েই বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গ তার ব্যতিক্রম নয়। এটা একটা সামাজিক ব্যাধি। সবাই একযোগে প্রতিবাদ করা উচিত। এক মঞ্চ করে নামার সময় এসেছে কিনা বলতে পারব না কিন্তু সমস্ত দল বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের এক সুরে প্রতিবাদ করা উচিত।ঘটনার পরই আর জি করের নির্যাতিতার বাড়ি আমি গেছিলাম। তার মায়ের সঙ্গে বাবার সঙ্গে আমার কথা হয়। তার আগে বেসরকারিভাবে আমি ময়নাতদন্তের রিপোর্টটা দেখেছিলাম। দেখে চমকে উঠেছি। চোখ দিয়ে রক্ত মুখ দিয়ে রক্ত কি বীভৎস খুন। একজনের পক্ষে করা সম্ভব নাকি একাধিক লোক যুক্ত ছিল আমি বলতে পারব না। তবে প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আরজি করের ঘটনা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। আমি মেনে নিতে পারছি না। এই ঘটনায় শাস্তি হওয়া উচিত।