সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
বাংলার সব বনাঞ্চলে প্রবেশমুল্য তুলে নিল বন দফতর। আলিপুরদুয়ারে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই পর্যটকদের প্রবেশ মুল্য বন্ধ করে দিল বন দফতর। সব বনাঞ্চলের ডিএফও-রা এই মর্মে নোটিশ জারি করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই বক্সা বাঘ বনে পর্যটকদের প্রবেশ্মুল্য তুলে দেওয়া হল।
বৃহস্পতিবার এই মর্মে নোটিশ জারি করেছে বক্সা বাঘ বনের পূর্ব বিভাগের উপক্ষেত্র অধিকর্তা দেবাশিষ শর্মা। উল্লেখ্য বুধবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে পর্যটকদের কাছ থেকে চড়া হারে প্রবেশ মূল্য নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী এই প্রবেশ তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
যেমন নির্দেশ তেমন কাজ। বৃহস্পতিবার এই মর্মে নোটিশ জারি করে প্রবেশ্মুল্য তুলে দিল বক্সা বাঘ বন কর্তৃপক্ষ। অথচ এই নোটিশ নিয়েও দিনভর নানান জল্পনা চলে বক্সাতে। ২৩ জানুয়ারি হওয়ায় প্রবেশ্মুল্য নেওয়া হচ্ছে না বলে রটিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়েও পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্যে প্রবেশের জন্য এখন আর খরচ করতে হবে না পর্যটকদের। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে বন দপ্তর। বক্সা, গোরুমারা, জলদাপাড়া-সহ সর্বত্র এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। তবে সফরের অন্যান্য কিছু খরচ আগের মতোই থাকছে।
গোরুমারার আওতাধীন যাত্রপ্রসাদ, চাপড়ামারি, মেদলা, চুকচুকি নজরমিনারে পর্যটকেরা দিনে মোট চারবার বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পান। একমাত্র চন্দ্রচূড় নজরমিনারটি বেহাল থাকার কারণে বন্ধ আছে। প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে একাধিক ফি আদায় করা হয়। প্রতিটি নজরমিনারের ফি আবার আলাদা। যেমন যাত্রাপ্রসাদে সকাল ও দুপুরের ক্ষেত্রে ২১০ ও বিকেলের শিফটে ২৯০ টাকা এন্ট্রি ফি নেওয়া হয় মাথাপিছু। জিপসির খরচ এখানে ১৩৩০ টাকা। জিপসি পার্কিং ফি ৪৮০ টাকা। গাইডের জন্য ৩৫০ টাকা দিতে হয়। বন দপ্তর সূ্ত্রের খবর, এন্ট্রি ও জিপসি পার্কিং ফি নেওয়া হবে না শুক্রবার থেকে। প্রতিটি জিপসিতে ছ’জন যাত্রী থাকতে পারেন, তাঁদের জন্য একজন গাইড। এর ফলে খরচ বেশ কিছুটা কমবে।
মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সেই খরচ এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যাওয়ায় খুশির হাওয়া পর্যটকদের মধ্যে। ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ী উজ্জ্বল শীল বলেন, ‘প্রতি বছর বহু পর্যটক গোরুমারা সহ ডুয়ার্সের পাহাড়, অরণ্যে বেড়াতে আসেন। এক ধাক্কায় বেশ কিছুটা খরচ কমলে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশা করছি।’ ডুয়ার্স ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেবের বক্তব্য, ‘লাটাগুড়ি-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বছরভর শুধুমাত্র জঙ্গলে বেড়াবার জন্য অনেক পর্যটক আসেন। গোরুমারার প্রবেশে টিকিট না লাগায় স্বাভাবিক ভাবেই অনেকেই জঙ্গল ভ্রমণ করতে আগ্রহী হবেন।’
উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ বিভাগের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, ‘আপাতত গোরুমারায় প্রবেশের ক্ষেত্রে পর্যটকদের টিকিট ও রোড ফি লাগছে না। এ দিন থেকেই এই নিয়ম চালু হয়ে গিয়েছে। গোরুমারায় সাপ্তাহিক ছুটি বৃহস্পতিবার থাকায় শুক্রবার থেকেই নয়া নিয়ম চালু হচ্ছে।’
জানা গিয়েছে বক্সা বাঘ বনে ঢুকতে গেলে পর্যটকদের কাছ থেকে প্রতিদিনের জন্য মাথা পিছু ১৫০ টাকা প্রবেশ্মুল্য নেওয়া হত । এছাড়া গাড়ির জন্য প্রতি গাড়ির জন্য ৪৮০ টাকা ধার্য করত বক্সা বাঘ বন কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে বক্সা বাঘ বনে ঢুকতে গেলে পর্যটকদের কাছ থেকে প্রতিদিনের জন্য মাথা পিছু ১৫০ টাকা প্রবেশ্মুল্য নেওয়া হত । এছাড়া গাড়ির জন্য প্রতি গাড়ির জন্য ৪৮০ টাকা ধার্য করত বক্সা বাঘ বন কর্তৃপক্ষ। বুধবার এই বিষয়টি প্রশাসনিক বৈঠকে তুলে ধরেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পর্যটকদের কাছ থেকে প্রবেশ্মুল্য আদায় বন্ধ করার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার থেকে সেই নির্দেশ কার্যকর হয়ে গেল। বিষয়টি নিয়ে বক্সা বাঘ বনের একাধিক বনকর্তাকে ফোন করা হলেও তাঁরা ফোন তোলেননি।