বিতস্তা সেন। কলকাতা সারাদিন।
মহিলাদের জন্য তাদের যোনির স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সর্বদা তাদের অন্তরঙ্গ অঙ্গগুলোর পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। অনেক সময় মহিলারা যোনিতে চুলকানি, সংক্রমণ ও ব্যথার মতো সমস্যার সম্মুখীন হন।
তবে, অনেক নারীই এই সমস্যাগুলিকে উপেক্ষা করেন, যার ফলে ভবিষ্যতে সমস্যা আরও গুরুতর হতে পারে।
তাই, মহিলাদের যোনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং তার সঠিক যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এই প্রতিবেদনে আমরা ভ্যাজাইনাল স্টিমিং সম্পর্কে জানবো, যা যোনির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। এটি মুখে স্টিম নেওয়ার মতো একটি প্রক্রিয়া, তবে এতে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
প্রসবের পরে যোনির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার গুরুত্ব
গর্ভাবস্থা ও প্রসবের পর মহিলাদের যোনিতে বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়। সাধারণ ডেলিভারির পর, যোনির পেশি ও টিস্যুগুলি প্রসারিত হয়। প্রসবের পরে যোনিতে সেলাই দেওয়া হয়, যার ফলে ব্যথা ও ফোলা ভাব অনুভূত হতে পারে।
এই অবস্থায়, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা প্রসবের পরে ভ্যাজাইনাল স্টিমিং নেওয়ার পরামর্শ দেন। সাধারণত, এটি যোনি পরিষ্কারের একটি পদ্ধতি, তবে প্রসবের পর যোনির ক্ষত নিরাময়ে এবং সেলাই দ্রবীভূত করতে ডাক্তাররা এই প্রক্রিয়া করার পরামর্শ দেন।

ভ্যাজাইনাল স্টিমিং কী এবং এটি কীভাবে কার্যকর?
যোনি মানবদেহের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশগুলির মধ্যে একটি, তাই ভ্যাজাইনাল স্টিমিং সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা জরুরি। এটি কোনো নতুন পদ্ধতি নয়, বরং এটি একটি প্রাচীন পদ্ধতি। অতীতে, যোনি পরিষ্কারের জন্য এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হতো, কারণ তখন যোনি পরিচ্ছন্ন করার জন্য কোনো কেমিক্যাল বা মেডিক্যাল প্রোডাক্ট ছিল না।
এই পদ্ধতিতে ওষধি গাছের পাতার সাহায্যে স্টিম নেওয়া হয়। ভ্যাজাইনাল স্টিমিং-এর জন্য আপনি রোজমেরি, ল্যাভেন্ডার, অরেগানো, তুলসি, ক্যামোমাইল ও ক্যালেন্ডুলার মতো ভেষজ উপাদান ব্যবহার করতে পারেন।

ভ্যাজাইনাল স্টিমিং করার সঠিক উপায়
প্রথমে, একটি বড় পাত্রে জল গরম করুন।
তাতে দুই কাপ ভেষজ উপাদান যোগ করুন এবং ৫ মিনিট ধরে ফুটতে দিন।
এরপর, জল কিছুটা ঠান্ডা হতে দিন এবং তারপর পাত্রের উপর বসুন বা স্কোয়াটিং পজিশনে বসুন।
স্টিম যেন সরাসরি যোনিতে পৌঁছায় তা নিশ্চিত করতে কোমরের চারপাশে বড় একটি তোয়ালে জড়িয়ে নিন।
এই অবস্থায় ২০-৪০ মিনিট পর্যন্ত বসে থাকুন।
স্টিমিং শেষ হওয়ার পর, শরীর হাইড্রেটেড রাখার জন্য পর্যাপ্ত জল পান করুন।
সতর্কতা ও সাবধানতা
যোনি অত্যধিক উষ্ণ ও আর্দ্র থাকলে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। যদি আপনি সাবধান না হন, তাহলে যোনিতে জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে। সাধারণত, মাসে ১-২ বার ভ্যাজাইনাল স্টিমিং করা যেতে পারে। মাসিকের পর এটি করা সবচেয়ে ভালো।

যদি কোনো চিকিৎসাগত সমস্যা থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। গর্ভবতী মহিলাদের ভ্যাজাইনাল স্টিমিং এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ কিছু ভেষজ উপাদান গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।