শৌভিক তালুকদার। কলকাতা সারাদিন।
“প্রস্তুতি কম, ব্যবস্থাপনা বেশি। শুধু ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারই করা হয়েছে। তার ফলেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল। এঘটনা যদি বিজেপি বিরোধী রাজ্য, যেমন বাংলা বা তামিলনাড়ুতে ঘটত, তাহলে তো এতদিনে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা বলা হত!” উত্তরপ্রদেশে মহাকুম্ভের পূণ্য স্নানের দিনে যেভাবে পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার প্রেক্ষিতে এভাবেই বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কুম্ভ মেলা নিয়ে যোগী রাজ্যের প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিয়েই বড় প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক।
মৌনি অমবস্যার রাতে অমৃতস্নানকে ঘিরে কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনায় সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা বলা হচ্ছে ৩০। তবে আদতে সংখ্যাটা আরও বেশি। ১০০ পেরিয়ে গেলেও অস্বাভাবিক কিছু নেই বলে দাবি করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেন, “খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। নিহতের সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে গেলেও অস্বাভাবিক কিছু নেই!”
প্রশাসনিক গাফিলতির বিষয়টিকে সামনে রেখে অভিষেক পরোক্ষে প্রশ্ন তুলেছেন, এতবড় দুর্ঘটনার পরও কেন যোগী রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হবে না? এ প্রসঙ্গে বাংলার গঙ্গাসাগর মেলার কথাও মনে করিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তিনি বলেন, “আমরাও তো এখানে গঙ্গাসাগর মেলা করছি। ১৪ বছরের সরকার। এখানে শুরু থেকেই মানুষের নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হয়।” এরপরই রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রসঙ্গ টেনে আনেন অভিষেক।
দুর্ঘটনার জেরে যেভাবে সাধারণ মানুষের আর্তি, হাহাকার সামনে এসেছে তাতে যোগী রাজ্যের প্রশাসনের প্রতি একরাশ ক্ষোভ উগড়ে অভিষেক বলেন, “মানুষ জীবদ্দশায় একবারই কুম্ভমেলায় যায়। অথচ সেখানে গরিব মানুষের জন্য কোনও ব্যবস্থা নেই। সবকিছু নেতা আর বড়লোকদের জন্য। তাদেরকে খাতির করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তাদের জন্য রাস্তা পর্যন্ত খালি করে দেওয়া হচ্ছে। এরা ভাবে দেশটাকে কিনে রেখেছি। তার ফলেই এতগুলো প্রাণ চলে গেল।”
অন্যদিকে, শনিবার ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ঠিক তার একদিন আগেই দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অর্থাৎ সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে দিল্লিতে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে বাজেট নিয়ে সরব হন অভিষেক। তিনি বলেন, “বাজেট সবসময় উদ্যোগপতিদের। এই বাজেট নিয়ে আর কোন আশা নেই। যেদিন থেকে মোদি সরকার ক্ষমতায় এসেছে, সেদিন থেকেই তো বাজেটের ফলাফল একটাই। গরিবরা আরও গরিব হয়েছে আর বড়লোকদের ধনসম্পদ আরও বাড়ছে।” এককথায় বলা যায়, বাজেট ইস্যুকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রকে ফের চাপে ফেলতে প্রস্তুত হচ্ছে তৃণমূল।