সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
অনলাইনে শপিং করার নেশা প্রেমিকার। তাতে ক্রমশ পকেট ফাঁকা হচ্ছিল প্রেমিকের। তার জেরে সম্পর্কে বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদের প্রতিশোধ নিতে নয়া ফন্দি যুবকের। প্রায় ৪ মাস ধরে প্রেমিকাকে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে ৩০০ টি গিফট পাঠাল প্রেমিক।
তবে প্রাক্তন প্রেমিকাকে উতক্ত করার ফন্দিতে হাজতবাস হতে হতে বাঁচল যুবক। শুনে মজার মনে হলেও বিষয়টি যথেষ্ট গুরুতর। মার্চ মাসে বিধাননগর সাইবার থানায় নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করেন ২৪ বছর বয়সী এক ব্যাঙ্ককর্মী।
তিনি জানিয়েছিলেন, প্রায় ৪ মাস ধরে কেউ তাকে একাধিক ক্যাশ-অন-ডেলিভারি পার্সেল পাঠিয়ে চলেছে। ক্যাশ-অন-ডেলিভারি পার্সেলগুলি তিনি গ্রহন না করায় অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট থেকে তার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়। এর ফলে তাকে প্রচন্ড হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল মহিলার কোন সহকর্মী এই কাজ করছে।
তবে পরে জানা যায় কোন সহকর্মী নন, বরং মহিলার প্রাক্তন প্রেমিক সুমন সিকদার (২৫) এই কাজের সঙ্গে জড়িত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে সুমন সিকদার নদিয়ার বাসিন্দা। তাঁর এই ব্যাঙ্ককর্মীর সঙ্গে অনেকদিনের সম্পর্ক। সম্প্রতি তাদের বিচ্ছেদ হয়। আর বিচ্ছেদের প্রতিশোধ নিতেই এই কাজ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমন সিকদার শিকার করেছেন যে তিনি তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকাকে উতক্ত করার উদ্দেশ্যে তার অ্যাকাউন্ট থেকে পার্সেল অর্ডার করতেন। পাশাপশি বিভিন্ন অপিরিচিত নম্বর থেকে ক্রমাগত কল ও ম্যাসেজ পাঠাতেন।
তিনি আরও জানান, যে তাঁর প্রাক্তন ওই প্রেমিকা অনলাইনে কেনাকাটা করতে পছন্দ করতেন এবং প্রায়শই তার কাছ থেকে উপহার দাবি করতেন। সবসময় গিফট কিনে দেওয়া তার পক্ষে আর সম্ভব হয়ে উঠছিল না।
তিনি ভেবেছিলেন যে তার প্রেমিকা তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন কারণ তিনি তার প্রেমিকার ভরণপোষণের দ্বায়িত্ব নিতে পারছিলেন না তাই। তাই তিনি এই বিশাল সংখ্যার পার্সেল পাঠিয়ে হয়রানির সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনায় বুধবার সুমন সিকদারকে সল্টলেক কোর্টে তোলা হলে, তিনি জামিন পেয়ে যান।
লেকটাউনের একটি ব্যাংকে কর্মরত ওই মহিলা জানান, গত বছরের নভেম্বর থেকে সমস্যাটি শুরু হয়। সুমনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরপর বিভিন্ন সংস্থার ডেলিভারি কর্মীরা তার বাড়িতে বিভিন্ন পার্সেল নিয়ে আসতে থাকেন।
কয়েকশ পার্সেল তাকে রিটার্ন করতে হয় কিছু কিছু পার্সেল তিনি নেবেন না বলে জানিয়ে দেন ডেলিভারি দিতে আসা কর্মীদের। এগুলো সবই ছিল ক্যাশ অন ডেলিভারি আওতায়। অর্থাৎ টাকা দিতে হবে ওই মহিলাকেই। এইসব গিফটের মধ্যে ছিল ট্যাবলেট, মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে পোশাক ও ছোট ছোট নানা জিনিস।
বিশেষত ভ্যালেন্টাইন উইকে প্রত্যেকদিন একটি করে পার্সল চলে আসত বাড়িতে। ডেলিভারি এজেন্টদের সঙ্গে প্রায়শই রীতিমতো ঝগড়া, কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যেত। আর সেজন্য অনেকেই আমাকে নেতিবাচক রেটিং দিয়েছেন। এই পুরো বিষয়টি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে জানাতে তারা আমার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়।