সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
“আমরা গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি ইদ এবং রামনবমীর দিন কোনও মহল থেকে এমন পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যাতে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে। সাম্প্রদায়িক শান্তি বিঘ্নিত হয়।” ঈদ এবং রামনবমীকে সামনে রেখে বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য কোন কোন সমষ্টির পক্ষ থেকে অসাধু প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ।
এপ্রিলের ৬ তারিখ রাম-নবমী। তার আগে তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। রাজনীতি চলছেই। ইতিমধ্যেই বিজেপি আশঙ্কা করেছে ওই দিন অশান্তি হতে পারে। তবে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম এবং এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার। অন্যদিকে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা জানিয়েছেন, রামনবমীর জন্য সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের পক্ষে যতটা যা করার সমস্তটাই করা হবে। কেউ যদি কোনরকম অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং যে সকল সেনসিটিভ স্পট রয়েছে সেখানে নজর দেওয়া হচ্ছে এসব। সেই সকল সেনসিটিভ স্পট আইডেন্টিফাই করা হয়েছে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।শুধু তাই না , যে সকল স্টেক হোল্ডার রয়েছে তাদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি এবং কি কি ব্যবস্থা নিতে হবে সব বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। কলকাতা পুলিশ আশাবাদী যে রামনবমীতে কোনরকম অশান্তি হবে না এবং যারা অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে।
এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম বলেন, “দু’টো বড় উৎসব সামনে আছে। আজ শ্যামপুর থানায় একটা মামলা রুজু হয়েছে দু’জনের বিরুদ্ধে। তদন্ত শুরু হয়েছে। উৎসবের মরশুম। দুই সম্প্রদায়কে সতর্ক থাকতে হবে। তবে জনগণকে বলব, যেন কোনও প্ররোচনায় পা না দেন।” তিনি আরও বলেন, ” ছ’তারিখ ইদ। তারপর রাম-নবমী। আগামী ১০দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ সতর্ক রয়েছে। সব জেলায় সতর্কতামূলক বার্তা পাঠানো হয়েছে।”
অপরদিকে, এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেন, “আমরা গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি ইদ এবং রামনবমীর দিন কোনও মহল থেকে এমন পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যাতে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে। সাম্প্রদায়িক শান্তি বিঘ্নিত হয়। এমন কিছু পোস্টার লাগানোর পরিকল্পনার কথা জানতে পেরেছি আমারা। যাতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে একটা বিদ্বেষ-হিংসা তৈরি হয়। এমনকী কিছু কাজেরও পরিকল্পনার কথা জানতে পেরেছি যাতে শান্তি নষ্ট হয়।”

অপরদিকে শ্যামপুরের ঘটনায় কী কী ধারায় মামলা রুজু হয়েছে তাও জানালেন সুপ্রতিম সরকার। তিনি বলেন, “এর ভিত্তিতে আমরা কেস করেছি। ধারাগুলি হল- বিএনএস ১৯৬(১)-বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পতিক শত্রুতা তৈরি করা। ২৯৯-এমন কোনও দুরভিসন্ধি কাজ করা যাতে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে। ৩৫৩ (১),৩৫৩(২)-মূল কথা যে এমন কোনও কাজ করা যাতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে একে অন্যের বিরুদ্ধে প্ররোচনা তৈরি হয়। ৬১(২)-অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র। অভিযুক্তদের বড় কোনও পরিকল্পনা ছিল কি না সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে।”