সুহানা বিশ্বাস। কলকাতা সারাদিন।
কেন্দ্রীয় সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী বাংলায় স্মার্ট মিটার বসানো হবে না। বুধবার বিধানসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বিদ্যুৎ মন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার স্মার্ট মিটার বাধ্যতামূলক করতে চেয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তা করতে দেবেন না। আমাদের রাজ্যে স্মার্ট মিটার বসানো হবে না।” স্মার্ট মিটার নিয়ে রাজ্যের একাধিক জায়গায় গ্রাহকদের বিক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, বিদ্যুতের বিল বেশি আসছে। এবার স্মার্ট মিটার নিয়ে প্রকাশ্যে কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত। বুধবার এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয় বিধানসভাও।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রকল্প চাপানোর অভিযোগ তুলেছে রাজ্য। প্রতিবাদ করেছে বিজেপি। বুধবার বিধানসভায় বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, “কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে চাপিয়ে দিয়েছে।” কিন্তু রাজ্য যে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, সেটাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।
এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ মন্ত্রী জানিয়ে দেন, “যে সব স্মার্ট মিটার লাগানো হয়েছে, সেগুলি পোস্ট পেইড হিসেবে আগের নিয়মে কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী। এই মিটারগুলোকে যেদিন লাগানো হচ্ছে, তার তিন মাস পর থেকে সাধারণ মিটার হিসাবে গণ্য করা হবে।”
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যজুড়ে প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৬৫ শতাংশ আবাসিক বাড়িতে এবং বাকি ৩৫ শতাংশ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বসানো হয়। জানা গেছে, বারাসাতের চাঁপাডালি মোড়ে স্মার্ট মিটার নিয়ে ওঠা অভিযোগ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছায়। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যুৎ দফতরকে এই বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দেন।
তবে বিধানসভায় ঘোষণার আগেই গত সোমবার জারি করা বিদ্যুৎ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে কিছু বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানো হলেও অসংখ্য অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। হুগলির রবীন্দ্রনগর কালীতলার বাসিন্দারা স্মার্ট মিটারের অস্বাভাবিক বিল নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
তাদের দাবি, জোর করে মিটার বসানোর পর থেকেই বিল কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এছাড়া, ব্যান্ডেলের একটি পরিবারও একই ধরনের অভিযোগ করেছে, যেখানে এক মাসে ১২ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল এসেছে। এই ধরনের পরপর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ দফতর আবাসিক বাড়িতে স্মার্ট মিটার লাগানো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।