শোভন গায়েন। কলকাতা সারাদিন।
‘আপনি যদি সোমবারের মধ্যে এই সমস্ত অভিযোগ তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সামনে না আনেন তাহলে ধরে নেব আপনি এসআইআর নিয়ে ভয় পেয়েছেন।’ এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে খোলা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এসআইআর নিয়ে একরাশ উদ্বেগ প্রকাশ করে কমিশনের তুলোধনা করেন মমতা। তাঁর সাফ কথা, এসআইআরের নামে আদপে এনআরসি করার চক্রান্ত করছেন। একের পর এক তীব্র আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে। সেই সময়ই কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেন, ‘এখানে যিনি রাজ্য থেকে গিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। সেগুলি সময় হলে বলব। আশা করি তিনি বেড়ে খেলবেন না। তিনি বড্ড বেশি অফিসারদের থ্রেট করছেন। এদিকে তিনি নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ।’ আর মমতার এই বক্তব্যকেই হাতিয়ার করেছেন বিরোধী দলনেতা।
বৃহস্পতিবার রাতেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মমতা যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন তা নির্বাচন কমিশনকে হুমকি দেওয়ার নামান্তর বলে অভিযোগ করার পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমি এটাকে রাজনৈতিক ভাষাও বলব না। গুন্ডাদের ভাষা বলব। মনোজ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে কী তথ্য আছে তা পশ্চিমবঙ্গের জনগণ জানতে চায়, আমরা প্রধান বিরোধী দল জানতে চাই। আমরা জানতে চাই কোন কোন আধিকারিককে কীভাবে তিনি ধমকেছেন। সেই আধিকারিকের নাম প্রকাশ করুন। এই আধিকারিককে দিয়ে দরকার নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করুন। আমরা তাঁর নাম পদ জানতে চাই। তিনি বিএলও, না বিডিও না ম্যাজিস্ট্রেট, না এসডিও না এডিএম আমরা এটা জানতে চাই।’
এদিন লাগাতার রাজ্যের আমলাদের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরবও হতে দেখা যায় তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘আপনি যদি সোমবারের মধ্যে এই সমস্ত অভিযোগ তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সামনে না আনেন তাহলে ধরে নেব আপনি এসআইআর নিয়ে ভয় পেয়েছেন। ক্ষমতা হারানোর ভয় পেয়েছেন। সোমবারের মধ্যে মনোজ আগরওয়ালের দুর্নীতি প্রকাশ করতে না পারলে আপনার আইএএস, আইপিএস অফিসারদের, সিএমও-র স্টাফদের সিরিজ অফ দুর্নীতির কথা আমরা বলব।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেডলাইন বেঁধে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আপনি যদি সোমবারের মধ্যে মনোজ আগরওয়ালের দুর্নীতি প্রকাশ করতে না পারেন, আপনার আইএএস-আইপিএস অফিসারদের, আপনার সিএমও-র স্টাফদের সিরিজ অফ দুর্নীতি আমরা আজ কিছুটা বললাম, বাকিটাও ভবিষ্যতে বলব। ফাঁস করুন। আপনাকে সোমবার বিকাল ৫টা অবধি টাইম দিয়ে গেলাম। প্রমাণ দিতে হবে আপনাকে। গতকাল পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান-মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক হেড কোয়ার্টার নবান্নতে রাজ্যের মুখ্যসচিব…এক্সটেনশনে থাকা আইএএস অফিসার মনোজ পন্থের উপস্থিতিতে সরাসরি নির্বাচন কমিশন এবং তাঁর মুখ্য প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গের সিইও মনোজ আগরওয়ালকে আক্রমণ করেছেন। যাকে বলা যেতে পারে, বিলো দ্য বেল্ট। মনোজ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে আপনার কাছে কী তথ্য আছে ? পশ্চিমবঙ্গের জনগণ জানতে চায়। আমরা প্রধান বিরোধী দল জানতে চাই। আপনি যদি সোমবারের মধ্যে মনোজ আগরওয়ালের দুর্নীতি প্রকাশ করতে না পারেন, আপনার আইএএস-আইপিএস অফিসারদের, আপনার সিএমও-র স্টাফদের সিরিজ অফ দুর্নীতি আমরা আজ কিছুটা বললাম, বাকিটাও ভবিষ্যতে বলব। ফাঁস করুন। আপনাকে সোমবার বিকাল ৫টা অবধি টাইম দিয়ে গেলাম। প্রমাণ দিতে হবে আপনাকে। প্রমাণ না দিলে, আর সিসি এবং সিইও ব্যবস্থা না নিলে…দীপাবলির পরে কয়েক হাজার লোক নিয়ে আসব, নিয়ম মেনে ২০০ মিটার দূরে জনতা থাকবে, আর ৫০-৬০টা এমএলএ এখানে নীচে বসে থাকব। জ্ঞানেশ কুমার বা তাঁর প্রতিনিধি না এলে উঠব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের উপরে নয়।’