শৌভিক তালুকদার। কলকাতা সারাদিন।
চলছে ভারত বনাম বাংলাদেশ (IND vs BAN) প্রথম টেস্ট ম্যাচ। ঘরের মাঠে চালকের আসনে রয়েছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। কেবল প্রথম দিনের প্রথম দুটি সেশন সাফল্য পেয়েছিলেন টাইগার্স’রা। বাকিটা পুরোপুরি ‘ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক।’ টিম ইন্ডিয়ার তোলা ৩৭৬ রানের জবাবে মাত্র ১৪৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলেন শাকিব, লিটন’রা।
২২৭ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছে ভারত। গতকাল রোহিত, যশস্বী জয়সওয়াল ও বিরাট কোহলি আউট হন। দিনের শেষে ভারতের স্কোরবোর্ডে ছিলো ৮১/৩। আজ অর্থাৎ তৃতীয় দিনেও পুরোপুরি দাপট দেখিয়েছেন ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant) ও শুভমান গিল (Shubman Gill)। ব্যাটিং-এর ফাঁকে প্রতিপক্ষ দলের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা গেলো ভারতের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার’কে।
খাতায়-কলমে বাংলাদেশের অধিনায়কের নাম নাজমুল হোসেন শান্ত (Najmul Hossain Shanto)। কিন্তু ঋষভ পন্থের কাণ্ড দেখে ক্রিকেটজনতার অনেকেই তাঁকে টাইগার্সদের অঘোষিত অধিনায়ক তকমা দিচ্ছেন। ম্যাচ চলাকালীন লেগ সাইডে ৩০ গজের বৃত্তের মধ্যে কোনো ফিল্ডার না দেখে শান্ত’কে উদ্দেশ্য করে ঋষভ বলে ওঠেন, “আরে ইধর আয়েগা এক। ইধর কম ফিল্ডার হ্যায়” (আরে এদিকে আসবে একজন। এদিকে কম ফিল্ডার রয়েছে।) পন্থের ফিল্ডিং সাজানোর পরামর্শ মনে ধরে বাংলাদেশ অধিনায়কের। তিনি সত্যিই একজন ফিল্ডারকে পাঠিয়ে দেন মিড উইকেট অঞ্চলে ‘সিঙ্গল’ বা ‘ডাবল’ আটকানোর জন্য।
বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং বোলার তাসকিন আহমেদ সেই অনুযায়ী ফিল্ডিং সাজান।
কেন পন্থ এরকম করলেন, কেনই বা শান্ত এবং তাসকিন বাধ্য ছেলের মতো তাঁর কথা শুনলেন, না কি পুরোটাই মজার ছলে, তা জানা যায়নি। প্রশ্ন উঠছে, যদি এর মধ্যে কোনও মজা না থাকে, তা হলে একটা দল বিপক্ষ ব্যাটারের কথা শুনে ফিল্ডিং সাজায় কী করে?
গোটা ঘটনায় হাসির রোল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘ঋষভ খেলবে আর মজার ঘটনা ঘটবে না? এমনটা হতে পারে না’ লিখেছেন একজন। ‘ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের হয়েও খেলছেন ঋষভ, প্রতিভাই অন্য স্তরের’ মন্তব্য আরও একজনের।
ঋষভের (Rishabh Pant) কাণ্ডে অনেকের মনে পড়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনি’র (MS Dhoni) কথা। ২০১৯-এর ওডিআই বিশ্বকাপ চলাকালীন এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই (IND s BAN) ওয়ার্ম আপ ম্যাচে টাইগার্সদের ফিল্ডিং সাজানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি। বোলার সাব্বির রহমান’কে দাঁড় করিয়ে ধোনি অনুরোধ করেছিলেন স্কোয়্যার লেগের ফিল্ডারকে বাম দিকে সরিয়ে দিতে। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজার নির্দেশের অপেক্ষা না করেই ফিল্ডারকে সরে যেতে বলেন সাব্বির। প্রসঙ্গত সেই ওয়ার্ম আপ ম্যাচে ধোনি শতরান করেছিলেন।
২০২২ সালের পর এই প্রথম টেস্ট খেলছেন পন্থ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শেষ বার টেস্ট খেলেছিলেন তিনি। তার পরেই গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হন। ক্রিকেট থেকে ১৬ মাস দূরে ছিলেন পন্থ। এই বছর আইপিএলে খেলেন তিনি। এ বার টেস্টেও প্রত্যাবর্তন হল তাঁর। সেই ম্যাচে শতরানও করলেন পন্থ। ১২৮ বলে ১০৯ রান করেন তিনি। পন্থ এবং শুভমন গিল মিলে ভারতকে ৫১৪ রানের লিড এনে দেয়। বাংলাদেশের জয়ের জন্য চাই ৫১৫ রান।
প্রথম ইনিংসে ভারত ৩৭৬ রান করেছিল। সেই ইনিংসে শতরান করেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে শেষ হয়ে যায় ১৪৯ রানে। যশপ্রীত বুমরা নেন চার উইকেট। দু’টি করে উইকেট নেন আকাশ দীপ, মহম্মদ সিরাজ এবং রবীন্দ্র জাডেজা। বাংলাদেশকে ফলো-অন করায়নি ভারত। ২২৭ রানে লিড পেয়েছিল তারা। সেটার সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ২৮৭ রান যোগ করে ভারত।